রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও অবৈধ অভিবাসনকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিকে শেষ পর্যন্ত মানবিক দৃষ্টিতে দেখছে অং সান সুচি’র দল। মূলত সুচির দেশের রোহিঙ্গাদের কেন্দ্র করেই অভিবাসী সঙ্কটে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন।
ভারত মহাসাগরে ভাসমান অবৈধ অভিবাসীদের বেশিরভাগই সুচি’র দেশ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা। কিছু আছে বাংলাদেশের। তাদেরকে নিয়ে যে সংকট তা থেকে উত্তরণের জন্য মিয়ানমার, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন।
অভিবাসী সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘ সব ধরনের সহায়তা দেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তার আহ্বানের পাশাপাশি সাগরে ভাসতে থাকা অভিবাসীদের কোনো দেশ আশ্রয় না দেওয়ায় ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন।
তবে জাতিসংঘ এবং এরকম সংস্থাগুলোর কঠোর সমালোচনার মুখে মানবপাচার রোধে অবশেষে বুধবার আলোচনায় বসতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিন দেশ- থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে নানা ইস্যুর মধ্যে অবৈধ অভিবাসীর বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে।
যে দেশগুলোকে জাতিসংঘ অভিবাসীদের আশ্রয় দিতে বলছে, তারা সংকট নিরসনে কিছুটা উদ্যোগী হলেও যে মিয়ানমার থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীদের ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রযাত্রা সেই মিয়ানমার কোনো কিছুতেই কান দিচ্ছে না।
২৯ মে থাই প্রধানমন্ত্রী যে সম্মেলন আহ্বান করেছেন সে ব্যাপারেও শীতল আচরণ করছে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশের নাগরিক হিসেবেই স্বীকার না করা মিয়ানমার।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত অং সান সুচি’র দলও রোহিঙ্গাবিরোধী অবস্থানে। তবে এতোদিনে কিছুটা মানবিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তার দল এনএলডি। অবৈধ অভিবাসনকে মানবিক দৃষ্টিতে দেখার কথা জানিয়ে এনএলডির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, অভিবাসীদের মিয়ানমার ঠাঁই দিতে না পারলেও, সাগরে ঠেলে দিতে চান না তারা।
অবৈধ নৌকা ধ্বংসে ইউরোপীয় যৌথ নৌবাহিনী বিশ্বের একদিকে এরকম জটিল পরিস্থিতির মধ্যে ভূমধ্যসাগরে মানবপাচার ঠেকাতে যৌথ নৌ-বাহিনী গঠনে একমত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইইউ-এর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মোগেরিনি জানিয়েছেন, পাচারকারীদের নৌকাগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলো ধ্বংস করাই হবে যৌথ নৌ-বাহিনীর কাজ।
আগামী মাস থেকে শুরু হবে তাদের অভিযান।