মওলানা ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে এসে হামলার শিকার হওয়ার পৌনে ৩ ঘণ্টা পর টাঙ্গাইল ছেড়েছেন গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া এবং সংগঠনটির সদস্য সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
এই দীর্ঘ সময় কাগমারি পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশি হেফাজতে থাকার পর বিকেলে তারা তাদের সফরসঙ্গী ও দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে বের হন।
এর আগে ডা. জাফরুল্লাহ মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ করে ভিপি নুরের সাথে দেখা করতে এসে টাঙ্গাইলের সন্তোষের কাগমারি পুলিশ ফাঁড়ির গেট না খোলায় প্রায় ২০মিনিট গেটের বাইরে দাড়িয়ে ছিলেন। পরে তাকে ভেতরে ডুকতে দেয়া হয়। এরপর একত্রে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে বের হন তারা। এসময় পুলিশ পাহারায় তাদের টাঙ্গাইল ছাড়তে সহযোগিতা করা হয়।
নুরুল হক নুর বলেন, আমরা মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে আসলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় আমার সহযোদ্ধারা আমাকে নিরাপত্তা দিয়ে মাজারের পাশে থাকা একটি পুলিশভ্যানে তোলেন। এরপরও মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিশোটা নিয়ে পুলিশের সামনেই পুনরায় হামলা করে। হামলার ঘটনায় আমাদের অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
একপর্যায়ে পুলিশ পুলিশভ্যান থেকে নামিয়ে দিতে চাইলেও না পেরে পুলিশ আমাদের সেখান থেকে টাঙ্গাইলের কাগমারি পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। এখান থেকে পুলিশের নিরাপত্তায় মহাসড়ক পর্যন্ত পৌছে দেয়ার কথা বললেও পুলিশ অপরাগতা জানায় বলে দাবি করেন তিনি।
ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিপি নূরকে লক্ষ্য করে হামলা করে। পরবর্তীতে আমাদের অন্যদের উপর হামলা চালায়। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ভিডিও ফুটেজ আছে। দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সাধারণ নাগরীকেরও থানায় যাওয়ার অধিকার আছে। সেখানে আমার মতো একজন বৃদ্ধলোককে দীর্ঘসময় বাইরে দাড় করিয়ে রেখেছে। পুলিশের এমন অসহযোগীতা কখনোই আমরা আশা করিনি।
মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিবির পাল বলেন, ড. রেজা ও ভিপি নুর সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল। এসময় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করায় তারা আমাদের ওপর হামলা করে। এতে ছাত্রলীগের চার সদস্য আহত হয়েছে।
টাঙ্গাইলের অতিরক্তি পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সরোয়ার হোসেন বলেন, গণঅধিকার পরিষদের নেতারা মওলানা ভাসানীর মাজারে কাছাকাছি পৌঁছার পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালান। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ড. কিবরিয়া ও ভিপি নুরসহ গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের পুলিশি নিরাপত্তায় ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তারা চলে গেছেন।