হৃদরোগে আক্রান্ত পিতা তার শেষ ইচ্ছা প্রকাশ করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কন্যার বিয়ের অনুমতি দিতে রিট করার প্রেক্ষাপটে ‘আইন অনুযায়ী সর্বোত্তম স্বার্থে’ ওই কন্যার বিয়ের বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার রুলে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ এর ১৯ ধারা এবং বাল্যবিবাহ নিরোধ নীতিমালা-২০১৮ এর ১৭ বিধি অনুযায়ী অপ্রাপ্তবয়স্কদের সর্বোত্তম স্বার্থে বিয়ের জন্য উপযুক্ত কোর্ট নির্ধারণ করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এবিষয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, গত ২০ মার্চ ১৬ বছরের ওই কন্যার সঙ্গে ২৫ বছরের এক পাত্রের বিয়ের ব্যবস্থা করতে তাদের অভিভাবকরা ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। সে আবেদনে বলা হয়, কন্যার বয়স আনুমানিক ১৬ বছর এবং ছেলের বয়স ২৫ বছর। আমরা তাদের পিতা ও আইনত অভিভাবক। আমরা উভয় পরিবারের মধ্যে ভ্রাতৃপ্রতিম বন্ধুত্ব দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।’
আবেদনে কন্যার বাবা বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। কোন দিন দুনিয়া ছেড়ে চলে যাই, তা একমাত্র আল্লাহপাক ভালো জানেন। পিতা হিসাবে সৎপাত্রে কন্যা দান করা আমার সর্বোত্তম শেষ ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য আমার বন্ধুবর সুযোগ্য ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ের বিষয়টি উভয় পরিবারের পূর্ণ সম্মতিতে চূড়ান্ত হয়েছে। সামাজিক-পারিপার্শ্বিক ও আমার অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উক্ত বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা প্রয়োজন। আমাদের উভয় পরিবারের উক্ত ছেলে-মেয়ের সর্বোত্তম স্বার্থে, উভয় পরিবারের অভিভাবকের পূর্ণ সম্মতিতে সামাজিক ও ধর্মীয় মর্যাদায় উক্ত বিবাহ অনুষ্ঠানের জন্য আপনাদের আইনত অনুমতি একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় তা এই পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি ও ক্ষতির কারণ হবে।’
ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছে এই আবেদন করে অনুমতি না পেয়ে এটি সংযুক্ত করে কন্যার বাবাসহ দুই পরিবারের চারজন হাইকোর্টে রিট করেন। সে রিটের শুনানি নিয়ে আজ রুল জারি করলেন হাইকোর্ট। এই রুল শুনানি শেষে এবিষয়ে চুড়ান্ত একটি সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।