চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

অপরাজিত ব্রাজিলের সামনে আত্মবিশ্বাসী পেরু

সেমিফাইনাল: কোপা আমেরিকা-২০২১

লাতিন মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে শিরোপার ফয়সালা শেষের দুই ধাপে এসে ঠেকেছে। যার প্রথম ধাপে, প্রথম সেমিফাইনাল মাঠে গড়াবে রাত পোহানোর বেলায়। বাংলাদেশের আকাশে যখন ভোরের আভা সবে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করবে, তখন টানা দ্বিতীয় শিরোপার লক্ষ্যে ফাইনাল মঞ্চের টিকেট কাটতে পেরুর বিপক্ষে নামবে স্বাগতিক ব্রাজিল।

যেখানে খেলা
রিও ডি জেনিরোর এস্তাদিও অলিম্পিকো নিল্টন সান্তোস স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকার প্রথম সেমিফাইনালে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোর ৫টায় মুখোমুখি হবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ও পেরু।

যেভাবে সেমিতে দুদল
আসরে এখন পর্যন্ত অপরাজিত ব্রাজিল। জয়রথ ছুটিয়ে সেমিতে পা রেখেছে। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে চিলিকে হারিয়ে এসেছে। যারা গত আসরের আগের দুই আসরে টানা শিরোপা জিতেছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে।

কোয়ার্টারে ম্যাচের ৪৮ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল জেসাস সরাসরি লাল কার্ডে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলে ১০ জনে পরিণত হয়েছিল ব্রাজিল। চিলিকে হারাতে তবু সমস্যা হয়নি। টিটের শিষ্যরা ১-০ ব্যবধানে জেতে লুকাস পাকুয়েতার গোলে।

ব্রাজিল তিন জয় ও এক ড্রয়ে গ্রুপ ‘বি’তে সেরা হয়ে শেষ আটে এসেছিল। সেমিতে তাদের প্রতিপক্ষ পেরু সেখানে একই গ্রুপে ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় সেরা হয়ে আটের টিকেট কেটেছিল।

গ্রুপপর্বে দেখায় পেরুকে ৪-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল ব্রাজিল। সান্দ্রো, নেইমার, এভারটন ও রিচার্লিশন গোল করেছিলেন। ম্যাচে সেলেসাওদের লক্ষ্যে থাকা আট শটের বিপরীতে পেরুভিয়ানরা টার্গেট শট নিতে পেরেছিল সবে দুবার, সেটিও জাল পর্যন্ত পৌঁছায়নি।

সেই পেরু প্রথম কোয়ার্টারে জেতে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ৩-৩ গোলে সমতায় থাকার পর টাইব্রেকারে প্যারাগুয়েকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে সেরা চারে আসে তারা।

প্রত্যাশা-প্রাপ্তি
সেমিতে স্পষ্টতই ফেভারিট ব্রাজিল। কিন্তু গ্রুপপর্বে স্বাগতিকদের কাছে পাত্তা না পেলেও সেমিতে মুখোমুখি হওয়ার আগে বেশ আত্মবিশ্বাসী শূন্য থেকে নড়েচড়ে চারের টিকেট কাটা পেরুও। গত আসরের ফাইনালে এই পেরুকে হারিয়েই নিজেদের নবম কোপা টাইটেল নিশ্চিত করেছিল ব্রাজিল, জিতেছিল ৩-১ ব্যবধানে।

২০১৯ আসরে ফাইনাল খেলা পেরু ২০১১ ও ২০১৫ আসরে তৃতীয় হয়েছিল। সেমিতে কোচ রিকার্ডো গ্যারেকা অবশ্য সেরা তারকা আসরে দুই গোল করা আন্দ্রে ক্যারিল্লোকে পাচ্ছেন না লাল কার্ডের কারণে। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডে সান্তিয়াগো ওর্মেনো তার যোগ্য বিকল্প হতে পারেন।

যেমন হতে পারে একাদশ
ওর্মেনোর বাইরে পেন্দ্রো গ্যালেসে, ক্রিস্টিয়ান রামোস, সান্তামারিয়া, মিগুয়েল ট্রাউকো, সার্জিও পিনা, রেনাতো টাপিয়া, জিয়ানলুকা লাপাডুলারা শক্ত চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেন ব্রাজিলকে, নিজ নিজ পজিশন থেকে।

অন্যদিকে, ব্রাজিলেরও আছে লাল কার্ড সমস্যা, জেসাসকে পাবেন না টিটে। আভাস, তার জায়গায় গ্যাব্রিয়েল বারবোসার উপর পূর্ণ ভরসা রাখতে চলেছেন সেলেসাও কোচ।

গোলপোস্ট পাহারা দেবেন এডেরসন। সঙ্গে দানিলো, মার্কুইনহোস, থিয়াগো সিলভা, রেনান লোদি, কাসেমিরো, পাকুয়েতা, ফ্রেড, ফিরমিনো, রিচার্লিশন ও নেইমারকে নিয়ে শুরুর একাদশ সাজাতে চলেছেন টিটে।

মুখোমুখি ইতিহাস
ব্রাজিল ও পেরু নানা প্রতিযোগিতায় ৪৯ বার মুখোমুখি হয়েছে। ৩৪ জয়ের পিঠে, ৯ ড্র আর মাত্র ৫ হার ব্রাজিলের। কোপায় দুদল মুখোমুখি হয়েছে ২০ বার। এখানেও হলুদ সাম্বাদের আধিপত্য। সেলেসাওদের ১৪ জয়ের পিঠে সেখানে ৩ ড্র ও ৩ হারের স্মৃতি আছে।

গোলের দিক থেকে, পেরুর জালে ৪৬ বার বল জড়িয়েছে ব্রাজিল, বিপরীতে গোল হজম করেছে সবে ১৪টি।

পেরুর বিপক্ষে ব্রাজিলের শেষ জয়টি চলতি কোপার গ্রুপপর্বে হলেও, ব্রাজিলের বিপক্ষে পেরুর শেষ জয়টি সেই ২০১৬ সালে। যুক্তরাষ্ট্রে কোপার ম্যাচেই ১-০ গোলে জিতেছিল পেরুভিয়ানরা। ওই ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার নিশ্চিত করেছিল দলটি।

উক্তি
ম্যাচের আগেরদিন ব্রাজিল মিডফিল্ডার ফ্রেড নিজেদের ফেভারিট বলে ঘোষণা দিয়েছেন। বলেছেন, ‘ঘরের মাঠে নিশ্চিতভাবেই আমরা ফেভারিট। কিন্তু আমাদের সেটা ভালোভাবে সামলাতে জানতে হবে।’

পেরুর আর্জেন্টাইন কোচ রিকার্ডো গ্যারেকা আত্মবিশ্বাসী। বলেছেন, ‘ব্রাজিলের বিপক্ষে আরেকবার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ অর্জন করেছি আমরা, এবং ভুলগুলো শোধরানোর সুযোগ পেয়েছি, যেগুলো টুর্নামেন্টে প্রথম দেখায় আমরা করেছি। ব্রাজিল খুব শক্তিশালী ও ধারাবাহিক দল। কিন্তু আমরাও উন্নতি করছি ক্রমাগত।’