চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

‘অনভিজ্ঞ’ বাংলাদেশের জন্য সময় চাইলেন ডমিঙ্গো

ধরতে বললেন ধৈর্য

অধিনায়ক মুমিনুল হকের কথাপর্ব তখন শেষ। শেষের কাছে আসলে শনিবার শুরু হতে যাওয়া বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্টের স্বাগতিকদের কথাপর্বই। সংবাদ সম্মেলন তারপরও কিছুটা দীর্ঘ হল। কিছু বলবেন বলে মিনিটখানেক আগে যে পাশে বসা মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমামের কানে কানে কোনো সঙ্কেত দিয়ে রাখলেন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।

ডমিঙ্গো কোনো প্রশ্ন না নিয়েই এরপর বললেন বাড়তি কিছু মনোকথা। যাতে ফুটে উঠল খানিকটা অনুরোধের সুরও! টাইগারদের কোচ ‘অনভিজ্ঞ’ বাংলাদেশ দলের জন্য চাইলেন সময়, ধরতে বললেন ধৈর্য। সময় চাইলেন আসলে টাইগার ক্রিকেটের সমর্থকদের কাছে, আর সংবাদমাধ্যমের কাছে ধৈর্য।

সেসব চাওয়া-বলার পথে বাংলাদেশের এই টেস্ট দলটাকে যারপরনাই ‘অনভিজ্ঞ’ হিসেবে তুলে ধরলেন। সাদা পোশাকের ক্রিকেট আঙিনায় দুইদশক পেরিয়ে আসা বাংলাদেশ দলকে অনভিজ্ঞ বলার পেছনে ডমিঙ্গোর যুক্তিটা অবশ্য ফেলনাও নয়!

নিষেধাজ্ঞায় সাকিব আল হাসান নেই। দলের অটোমেটিক চয়েস সেরা খেলোয়াড়টিকেই তো শুধু হারায়নি বাংলাদেশ, হারিয়েছে একযুগের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ এক সেনানীকে। ইমরুল নেই চোটে, মাহমুদউল্লাহ নেই ফর্ম হারিয়ে, মোস্তাফিজ যখন আসা-যাওয়ার মধ্যে, খেলতে থাকা পেসারদের মধ্যে রুবেল চলে না অবস্থায় আছেন। তাহলে দলে বটগাছটা কে? আতশকাঁচের তো দরকার হয় না! তামিম, মুশফিকুর, মুমিনুল ছাড়া অভিজ্ঞ কাকে টেস্টে পাচ্ছে বাংলাদেশ?

জিম্বাবুয়ে টেস্টের টাইগার স্কোয়াডের কথাই যেমন ধরা যাক। তামিম ৫৯, মুশফিক ৬৯ ও মুমিনুল ৩৯ টেস্ট ছাড়া বাকিদের দিকে তাকানো যাক। ওপেনিংয়ে সাইফ হাসান খেলেছেন ১ টেস্ট, ওয়ানডাউনে শান্ত ৩, মিডল-লোয়ার মিডলে মিঠুন ৮, লিটন ১৯ টেস্ট। অলরাউন্ডার মিরাজ ২২, পেসে তাসকিন ৫, মোস্তাফিজ ১৩, রাহি ৮, ইবাদত ৫। পেসার হাসান মাহমুদ ও ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলি অভিষেকের অপেক্ষায়। স্পিনে তাইজুল ২৮, নাঈম ৪ টেস্ট। লাল বলের দাপটের সামনে অনভিজ্ঞই বটে! ডমিঙ্গো টানলেন সেটাই।

‘শেষ করার আগে দুটি বিষয়ে বলতে চাই। যদিও অফিসিয়াল প্রশ্ন নয়। ক্রিকেটকে বাংলাদেশে পাগলের মতো ভালোবাসা হয়। সংবাদমাধ্যমের মনোযোগ সত্যিই অবিশ্বাস্য। কিন্তু সবাইকে এটাও বুঝতে হবে, এই টেস্ট দলটার দিকেই দেখেন, নাজমুল ৩টি টেস্ট খেলেছে, সাইফ দ্বিতীয়টি খেলতে যাচ্ছে। আবু জায়েদ কেবল ৭টি, ইবাদত ৪ টেস্ট। দলটা সত্যিই খুব অনভিজ্ঞ টেস্টের জন্য।’

‘অধিনায়ক ভারত-পাকিস্তানে অধিনায়কত্ব করেছে, বিশ্বের অন্য অধিনায়কদের দিকে তাকান, তাদের হাতে যা থাকে, ১০০-১৫০ টেস্ট খেলা পেসার। ব্রড, রাবাদা, ফিল্যান্ডার, স্টার্ক থাকে। সেদিক থেকে সত্যিই খুব অনভিজ্ঞ টেস্ট দল এটা।’

‘যা বলার চেষ্টা করছি, সমর্থক-সংবাদমাধ্যমকে ধৈর্য ধরতে হবে। বিশ্বে টেস্টে এটিই এখন সবচেয়ে অনভিজ্ঞ দল। আমরা ভারত-পাকিস্তান যেয়ে একদিনের অনুশীলনে খেলেছি। সবাই যথেষ্ট পরিশ্রম করছে। সবার সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছুটা সময় দরকার ওদের। ওরাও জানে ভালো খেলতে হবে, সেই চেষ্টাটা করছে। একটু ধৈর্য ধরতে হবে। সবাইকে ওরা গর্বিত করবেই। শুধু খানিকটা সময় দরকার।’