বাংলাদেশে সিডর আক্রান্তদের সহায়তায় ১৩ কোটি ডলার (এক হাজার ৪৬ কোটি টাকা) দান করা সেই অজ্ঞাত ব্যক্তির ছেলেই এ তুর্কি বিন আবদুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ। যিনি গতকাল (মঙ্গলবার) বরগুনার আমতলীতে প্রধানমন্ত্রীর সাইক্লোন শেল্টার উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন।
২০০৭ সালে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানা সিডরের ধ্বংসলীলা এবং আক্রান্তদের দুর্দশা ও ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য দেখে মর্মাহত তখনকার সৌদি রাজা আবদুল্লাহ বাংলাদেশের মানুষকে সহায়তা করতে চান। এজন্য তিনি ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-আইডিবির প্রেসিডেন্ট ড. আহমেদ মোহাম্মদ আলী মাধ্যমে এ বিপুল পরিমান অর্থ পৌঁছে দেন।
কিন্তু তখন তিনি শর্ত দিয়েছিলেন তার নাম-পরিচয় গোপন রাখাতে হবে। তাই গত বছর জানুয়ারিতে মারা যাওয়ার আগে এ অর্থের উৎস সম্পর্কে একমাত্র ড. আহমেদ মোহাম্মদ আলী ছাড়া আর কেউ জানতেন না। কিন্তু গত বছর তার মৃত্যুর পর আবদুল্লাহর এ অর্থ সহায়তার বিষয়টি সামনে চলে আসে।
ইচ্ছে প্রকাশের পরদিনই বাংলাদেশের জন্য পুরো ১৩ কোটি ডলার সৌদি রাজা পৌঁছে দেন আইডিবির কাছে। তিনি ব্যক্তিগত অর্থ-সম্পদ থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দান করেন বাংলাদেশকে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গত জানুয়ারি পর্যন্ত এই বিপুল অর্থ দানকারীর নাম শুধু একজনই জানতেন। তিনি আইডিবির প্রেসিডেন্ট ড. আহমেদ মোহাম্মদ আলী। রাজার অনুরোধ রাখতে গিয়ে কারও কাছে প্রকাশ করেননি তিনি।
তবে গত জানুয়ারি মাসে সৌদি রাজা আবদুল্লাহ মারা যাওয়ার পর আইডিবি প্রেসিডেন্ট প্রথমবারের মতো রাজার ভাই ও সন্তানদের কাছে বিষয়টি খোলাসা করে বলেন, বাংলাদেশে সিডর আক্রান্তদের ১৩ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়া অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিটি ছিলেন তাদেরই রাজা। সেই অর্থে বাংলাদেশে স্কুল-কাম-শেল্টার হোম নির্মাণ হয়েছে। দানের ওই ১৩ কোটি ডলারের মধ্যে ১১ কোটি ডলার দিয়ে উপকূলীয় এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে ১৭৩টি স্কুল-কাম-আশ্রয়কেন্দ্র।