হট-ফেভারিটদের তালিকায় নাম নেই তাদের। তবে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে শিরোপার দাবি করার মতো ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়েই এসেছে নিউজিল্যান্ড। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে কিউইরা।
বাংলাদেশ সময় শনিবার বেলা ৩-৩০মিনিটে শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের ম্যাচটি শুরু হবে।
চার বছর আগে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। সেবার শিরোপার লড়াইয়ে তাসমান সাগরপাড়ের প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়ার কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয় কিউইদের। ইংল্যান্ডে এবার আর স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়তে চান না কেন উইলিয়ামসনরা।
অন্যদিকে, ১৯৯৬ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে এবার বাজি ধরার জন্য হাতেগোনা লোকও নেই। সর্বশেষ ১৪ ম্যাচের মাত্র একটিতে জিতেছে লঙ্কানরা। অবশ্য অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও লাসিথ মালিঙ্গার মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা নিউজিল্যান্ডের পরীক্ষা নেয়ার জন্য আটঘাট বেঁধেই নামবেন।
কলিন মুনরো ও মার্টিন গাপটিল- সময়ের অন্যতম দুই হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান নিউজিল্যান্ডের হয়ে ইনিংস ওপেন করবেন। মিডলঅর্ডারে কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, টম ল্যাথাম ও হেনরি নিকোলসের উপস্থিতি নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপেরগ ভীরতাই নির্দেশ করে।
২০১৫ বিশ্বকাপে বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি। চার বছর পরও এই দুজনকে নিয়েই দারুণ কিছুর স্বপ্ন বুনছে কিউইরা। গতি, নিখুঁত লাইন-লেন্থ, সুইং, ইয়র্কার ও বাউন্স- প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের ঘায়েল করার সব রসদই রয়েছে বোল্ট-সাউদির ভাণ্ডারে। তাদের পাশাপাশি পেস আক্রমণে জেমস নিশাম ও ম্যাট হেনরির মতো অভিজ্ঞ বোলারও রয়েছে কিউইদের।
স্পিন আক্রমণে মিচেল স্যান্টেনারের সঙ্গী হিসেবে রয়েছেন ইশ সোধি। তবে এই দুজন ইংলিশ কন্ডিশনে নিজেদের কতটা মেলে ধরতে পারেন সেটিই দেখার।
শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে সব সমস্যা টপ ও মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের অফ-ফর্ম এবং পারফরম্যান্সের অধারাবাহিকতা। ১৯৯৬ সালের চ্যাম্পিয়নরা এরপর দুবার ফাইনাল খেললেও একবারও শিরোপা জিততে পারেনি। এবার অবশ্য তাদের নিয়ে বাজি ধরার লোকও খুব একটা নেই।
অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে, উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস ও কুশল পেরেরা, লাহিরু থিরিমান্নের ব্যাটিং পারফরম্যান্সের উপরই নির্ভর করবে লঙ্কানদের সাফল্য। পেস বোলিং অ্যাটাকে মালিঙ্গা, নুয়ান প্রদীপ ও সুরঙ্গা লাকমাল অবশ্য প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষাই নেবেন।
বিশ্বকাপে এর আগে ১০বার মুখোমুখি হয়েছে নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। তাতে অবশ্য এগিয়ে রয়েছে ১৯৯৬ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। শ্রীলঙ্কার ৬ জয়ের বিপরীতে নিউজিল্যান্ড জয় পেয়েছে ৪ ম্যাচে।
তবে সবমিলিয়ে ওয়ানডেতে মুখোমুখি লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। দুই দলের ৯৮বারের সাক্ষাতে নিউজিল্যান্ডের ৪৮ জয়ের বিপরীতে শ্রীলঙ্কা জিতেছে ৪১টিতে। ১টি ম্যাচ টাই হয়েছে এবং ৮টি ম্যাচ পরিত্যক্ত।
অতীত পরিসংখ্যান অবশ্য দুই দলের মধ্যকার বর্তমান তফাৎ বোঝানোর জন্য যথেষ্ট নয়। সাঙ্গাকারা, জয়াবর্ধনে ও দিলশানরা অবসরে যাওয়ার পর থেকেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে শ্রীলঙ্কা। তবে ২২ গজের ক্রিকেটে নিজেদের দিনে যেকেউই প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারেন দলটির। আপাতত সেই আশায় বুক বেঁধে রয়েছে লঙ্কানরা।
সম্ভাব্য একাদশ
শ্রীলঙ্কা: দিমুথ করুনারত্নে (অধিনায়ক), লাহিরু থিরিমান্নে, কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, থিসারা পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, ইশুরু উদানা, লাসিথ মালিঙ্গা ও নুয়ান প্রদীপ।
নিউজিল্যান্ড: মার্টিন গাপটিল, কলিন মুনরো, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), রস টেলর, টম ল্যাথাম, জেমস নিশাম, কলিন ডি গ্রান্ডহোম, মিচেল স্যান্টেনার/ইশ সোধি, লোকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি।