চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অকল্যান্ডে টিপিপি চুক্তি সই, বিক্ষোভ-সংঘর্ষ

নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে ১২ সদস্য দেশের মন্ত্রীরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় বহুজাতিক বাণিজ্যিক চুক্তির অন্যতম ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশীপ (টিপিপি) চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।

দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে তৈরি করা বৃহৎ এই বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর এর বাস্তবায়ন পরবর্তী পদক্ষেপের অপেক্ষায় রইলো। তবে এই চুক্তি বিরোধীরাও সরব রয়েছেন।

চুক্তির বিরোধীতাকারী বিশেষত কিছু আমেরিকানদের মধ্যে এই শঙ্কা রয়েছে যে এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চাকরীর বাজার উন্নয়নশীল দেশের দিকে চলে যাবে।

বিশ্বের অর্থনীতির ৪০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করা স্বাক্ষরকারী ১২ টি দেশ এখন আগামী দুই বছরের মধ্যে এই চুক্তির অনুমোদন বা বাতিল করতে পারবে।

এই চুক্তিতে প্রথম স্বাক্ষর করেন অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রী এন্ড্রিও রব। সবশেষে নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্য মন্ত্রী টড ম্যাকক্ল্যা স্বাক্ষর করলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

বৃহস্পতিবারের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অকল্যান্ডের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক জেলার আশেপাশের রাস্তার বিক্ষোভকারীদের আন্দোলনে বিপর্যস্ত অবস্থায় পরিণত হয়।

অকল্যান্ড হারবর ব্রিজে প্রবেশে বাধা দিয়ে স্থানটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিক্ষোভকারীদের বেশ কয়েকটি দল।

এই চু্ক্তি বৃহৎ পরিসরে শ্রমিকদের নয় বরং বড় ব্যবসায়কেই সুবিধা দেবে বলে অভিযোগ করে আসা বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই চুক্তিকে নতুন ধরনের উল্লেখ করে তা আমেরিকান শ্রমিকদেরই প্রথম স্থানে অধিষ্ঠিত করবে বলে জানিয়েছেন।

টিপিপির সদস্য দেশগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ম্যাক্সিকো, চিলি এবং পেরু।

অংশীদারিত্ব চীনের মতো অন্যান্য নেতৃস্থানীয় অর্থনীতির দেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দেবে বলে বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়ে ওবামা বলেন, “চীনের মতো দেশকে নয় বরং ২১ শতকের অগ্রগামিতার বিধি রচনার জন্য টিপিপি আমেরিকাকেই অনুমোদন করবে। যেটা এশিয়া-প্যাসিফিকের মতো প্রগতিশীল অঞ্চলের জন্য বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।”

ওবামা আরো বলেন, ‘আরও আমেরিকান শ্রমিকদের তাদের প্রাপ্য সাফল্য অর্জনে এগিয়ে দেয়া এবং বিশ্বজুড়ে আরও আমেরিকান ব্যবসায়কে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে জয়লাভের পথ প্রশস্ত করার জন্য এই বছরেই আমাদের টিপিপি সম্পন্ন করা উচিত।’

গত কয়েক মাস ধরেই সদস্যভুক্ত অন্যান্য দেশসহ অকল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভকারীরা এই চুক্তির বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ এবং উচ্চকন্ঠ রয়েছে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১২ টি দেশের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগে সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যেই এই বাণিজ্যিক চুক্তি। কয়েক বছর ধরে চলা তর্ক-বিতর্ক এবং কয়েকবার ডেডলাইন ব্যর্থ হওয়ার পর গত বছরের অক্টোবরে এই বিষয়ে সমঝোতা হয়।

ওবামার তথাকথিত এশিয়াকে গুরুত্বারোপ করার একটি প্রধান অংশ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই পদক্ষেপ। কিন্তু নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে সামনে রেখে যা ‘বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট পদে আর এক বছরের মতো আসীন থাকা ওবামা এবং তার প্রশাসন এই বলে সতর্ক করেছেন যে রাজনীতিকরা এই চুক্তি অনুমোদন না করলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধিতে এক বছরে ১০০ বিলিয়ন ইউএস ডলার যোগ করতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক প্রতিনিধি মাইকেল ফরম্যান।