একজন নেপালি নারীকে পাশবিক নির্যাতন, গণধর্ষণ এবং হত্যার দায়ে ভারতের একটি আদালত সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীতে অকল্পনীয় নিষ্ঠুরতার নজির দেখানো অপরাধীরা নারীটিকে (২৮) ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি, তার গোপনাঙ্গে পাথর, ব্লেড এবং লাঠির মতো বস্তুও প্রবেশ করিয়ে নির্যাতন করে। নিখোঁজ হওয়ার তিনদিন পর মেয়েটির মৃতদেহ পাওয়ার পর ময়নাতদন্ত করে এ সকল বস্তু পাওয়া যায়।
নেপালি নারীটি হতাশায় ভুগছিলেন এবং এর জন্য তার চিকিৎসাও চলছিলো। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হরিয়ানা রাজ্যের উত্তরাঞ্চল থেকে তিনি হারিয়ে যান। তিন দিন পর একটি মাঠে তার লাশ খুঁজে পাওয়া যায়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মেয়েটি গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলো এবং গোপনাঙ্গে পাথর, ব্লেডের মতো বস্তুগুলো পাওয়া যায়।
“এমন ভয়ানক ঘটনা কখনোই দেখিনি” ভারতের সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি‘কে এমন মন্তব্য ব্যক্ত করেন নারীটির ময়নাতদন্ত করা ডাক্তার। দীর্ঘ ২৯ বছরের পেশাগত জীবনে এমন ভয়ংকর অভিজ্ঞতা তার হয়নি।
নির্যাতনের শিকার হওয়ার কয়েক মাস আগে আক্রান্ত নারীটি হরিয়ানা রাজ্যের রোহটাকে তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানকারই স্থানীয় একটি হাসপাতাল হতাশাজনিত মানসিক সমস্যার চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।
এই মামলার অষ্টম অভিযুক্ত অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে তাকে কিশোর আদালতে তার বিচার চলছে। মামলার নবম অভিযুক্ত গ্রেপ্তারের কিছু সময় পরেই আত্মহত্যা করে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রে জানা যায়, চরমদণ্ডের এই রায় প্রদান করা বিচারক সিমা সিংঘাল তার মন্তব্যে বলেন তিনি জনগণের সামনে একটি কঠিন বার্তা পৌছে দিতে চান। “আমি মামলাটিতে অভিযুক্ত সকলকে মৃত্যুদন্ড দিলাম এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার ফাঁসির দড়িতে ঝুলবে।”
সিমা সিংঘাল বলেন, বিচারিক কর্মকর্তা ছাড়াও আমি একজন মানুষ। আমি আক্রান্তের আর্তনাদ শুনতে পারি।
আমাদের সমাজে নারীরা এখনও পুরুষদের দ্বারা অপরাধ এবং বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় এখনও লিঙ্গ বৈষম্য দৃশ্যমান। কিন্তু সময়ের দাবি অনুযায়ী এই বিচারের মাধ্যমে জনগণের কাছে একটি কঠোর বার্তা দেওয়া উচিত।