চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার যেনো আর প্রলম্বিত না হয়

কেনো স্বাধীন দেশে বিরোধীদলের জনসভায় বোমা গুলি ও গ্রেনেড হামলার মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে আবার তার বিচারের নামে প্রহসন, এই বুঝি প্রথম। ২০০৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার একটি ঘৃণ্য প্রচেষ্টা হয়েছিল। যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর দ্বিতীয় সর্ব্বোচ কলংকিত ঘটনা।

এ উপলক্ষে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: ১৫ আগস্টের মধ্য দিয়ে দেশে হত্যা ক্যু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়। যে অবস্থা থেকে বেঁচে এসেছি তা খুবই কষ্টকর। এমনি সময় এই ধরনের হামলা হলে সবাই ছুটে আসতো সেবা দিতে। আমরা কোনো সেবা পাইনি। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলও তখন বন্ধ, কেউ সেবা নিতে পারেনি।

Bkash July

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধি জনসভায় নারকীয় গ্রেনেড হামলার ১৬ বছর পেরিয়ে গেছে। ওই ঘটনায় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের সন্তানেরা অনেকেই এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। দল ও সরকারের পক্ষ থেকে দান-অনুদান দেয়া হয়েছে। এর সঙ্গে বুকচাপা কষ্টও আছে। হারানো আপনজনদের কথা মনে পড়লেই ব্যাকুলতা জেগে ওঠে। চোখ থেকে ঝরে জল। বিশেষ করে বছর ঘুরে ২১ আগস্ট এলে হাহাকারে ডুবে যান তাঁরা। মুহুর্মুহু গ্রেনেড হামলায় ২২টি তাজা প্রাণ ঝরে পড়ে। সেই ঝড়ে বিলীন হয়ে গিয়েছিল অনেক স্বপ্নও।

গ্রেনেড হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি নেতাকর্মীদের সম্মিলিত মানব ঢালে বেঁচে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে তিনি হতাহত মানুষের প্রতিটি পরিবারের প্রতি যথাসাধ্য সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছেন। হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির ব্যবস্থা, ছেলেমেয়েদের উপযুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিসহ পড়াশোনার খরচ, চিকিৎসা ও ওষুধপথ্যের জোগাড়, ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট বা সঞ্চয়পত্র কিনে দিয়ে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যয় নির্বাহসহ সব চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে মিরপুরে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ফ্ল্যাটও দেয়া হয়েছে। আহত কেউ কেউ হয়েছেন সাংসদ।

Reneta June

বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসংক্রান্ত মামলা দুটি এখন দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে। হাইকোর্টে শুনানি পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে মামলার পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি হয়েছে। এখন পেপারবুক যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করা হবে। এরপর বেঞ্চ নির্ধারণের পালা। তারপর শুনানি শুরু হবে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম গত শনিবার বলেন: ডেথ রেফারেন্সের জন্য পেপারবুক প্রস্তুত হয়ে গেছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ও দ্রুত শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করা হবে।

১৬ বছর আগে এই দিনে ভয়ংকর সেই গ্রেনেড হামলা ও হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, গোয়েন্দা সংস্থার তৎকালীন দুই শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৪ জন জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের সদস্য। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং অপর ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়।

এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের বিচার খুব দ্রুত শেষ হবে বলে আমরা আশা করছি। এই বিচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা নির্মূল করার অপসংস্কৃতির অবসান হবে বলে মনে করি। এই বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবে বলে আমরা আশাবাদী। এই ধরণের সকল হত্যাকাণ্ডের বিচারই পারে বাংলাদেশকে আইনের শাসনের দিকে নিয়ে যাওয়ার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরি করতে। আমরা আরও আশাবাদ ব্যক্ত করি, দ্রুতই যেনো এই রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতির নিকৃষ্ট রাজনীতিবিদদের চরিত্র উম্মোচিত হয়।

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View