পাকিস্তানিদের বর্বরতা আর নির্যাতনের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেও শিরদাড়া টানটান করে প্রতিরোধের দেয়াল তৈরি করে তৎকালীন রক্তাক্ত পূর্ব বাংলা। মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার জয় বাংলা স্লোগান পৌঁছে যায় ওপার বাংলার থিয়েটার রোড থেকে বালিগঞ্জ স্ট্রিট হয়ে টেরিটিবাজারে। সিটি অফ জয়ের ৯ নম্বর সার্কাস এভিনিউয়ের বাড়িতেই ১৯৭১ এর ১৮ এপ্রিল উড়ে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা।
১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের প্রায় সকল কার্যক্রমই পরিচালিত হয়েছিল কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ইতিহাস বলছে, যুদ্ধের সময় কলকাতায় অবস্থিত পাকিস্তান উপ-দূতাবাস শুরু থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করছিল। এর ফলে কূটনৈতিক অঙ্গনেও পাকিস্তান প্রথম ধাক্কা খায় কলকাতাতেই।
কলকাতায় পাকিস্তানের ডেপুটি হাইকমিশনার হোসেন আলী কূটনীতিকদের মধ্যে প্রথম বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন। কলকাতার ৯ সার্কাস এভিনিউ, বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরণী।
এটিই সেই ইতিহাস ধরে রাখা অহংকারের জায়গা যেখানে ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল বেলা ১২টা ৪১ মিনিটে ডেপুটি হাইকমিশনার এম হোসেন আলী দূতাবাস থেকে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের কূটনীতিকরা সেই ইতিহাসকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। যে মিশনে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উড়েছিলো সেই মিশন পরিচালনায় গর্বিত প্রায় ৫ মাস আগে ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে যোগ দেওয়া তৌফিক হাসান।
সেই সময় কলকাতার পাকিস্তান উপ-দূতাবাসে কাজ করছিলেন ৭৪ জন, এর মধ্যে ৭০ জন বাঙালির সবাই বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন। গঙ্গাতীরের কলকাতা শহরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিভরা প্রায় ২৫টি স্থাপনা আছে যেখানে স্মৃতির স্মারক রক্ষায় চেষ্টা করছে ডেপুটি হাইকমিশন।
তৌফিক হাসান বলেন, ভারত সরকারের কাছ থেকে ভবনগুলো যদি বাংলাদেশ সরকারের অধীনে নিয়ে আসা যায় তাহলে একটি বড় কাজ হবে। এ লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে আলোচনাও চলছে বলে জানান তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি মোড়ানো শহর কলকাতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূর্ণাঙ্গ একটি ভাস্কর্য স্থাপনের পরিকল্পনাও নিয়েছে বাংলাদেশ মিশন।
বিস্তারিত দেখুন ভিডিও রিপোর্টে: