চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

সবার জন্য উন্মুক্ত ‘পানামা পেপার্স’

নামী তারকা, বিশ্ব রাজনীতির রথী-মহারথীদের কর ফাঁকির তথ্য ফাঁস করে
চাঞ্চল্য সৃষ্টি করা ‘পানামা পেপার্স’ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই।

ফুটবল
তারকা মেসি, বলিউড তারকা অমিতাভ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিন ক্যামেরনকে
বেকায়দায় ফেলে দেয়া ‘পানামা পেপার্স’ নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনার পরও এতোদিন
অনেক কিছুই অজানা ছিলো বিশ্ববাসীর কাছে।

কোটিপতিদের কেলেঙ্কারিগুলো জানার
কৌতুহল মেটাতে অবশেষে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলো ‘পানামা পেপার্স’
তথ্যভাণ্ডার। সোমবার ‘পানামা পেপার্স’ ফাঁসকারী ওয়াশিংটনভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম আইসিআইজে এই তথ্যভাণ্ডার উন্মুক্ত করে। বিশ্বের ৬৫টি দেশের ১৯০ জনের মতো সাংবাদিক এই কনসোর্টিয়ামের সদস্য।

সাধারণ জনগণ যাতে কর ফাঁকি দেয়া, অঢেল সম্পদের মালিক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য খুঁজতে পারে সেজন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডারে ‘সার্চ’ সুবিধা রাখা হয়েছে। প্রকাশিত তথ্যভাণ্ডারে দুই লাখেরও বেশি লুকানো অ্যাকাউন্ট এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য রয়েছে।

‘পানামা পেপার্স’ কী: ‘পানামা পেপার্স’ হচ্ছে ১১ দশমিক ৫ মিলিয়ন দলিল এবং ২ দশমিক ৬ টেরাবাইট তথ্য যা ই-মেল, আর্থিক বিবরণী, পাসপোর্ট এবং কর্পোরেট নথি আকারে আছে। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকাকে সংযোগকারী ভূখণ্ড পানামা’র একটি আইন বিষয়ক সংস্থা ‘মোসাক ফনসেকা’র কাছে এসব ‘অফশোর’ কোম্পানিগুলোর তথ্য ছিলো। এজন্য এইসব দলিলপত্রকে ‘পানামা পেপার্স’ বলা হয়।

সোমবার প্রকাশিত তথ্যভাণ্ডারে অনেক কাগুজে প্রতিষ্ঠানের ক্রেতাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান ১৯৭৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত প্রায় ৪০ বছর ধরে নিজেদের আয়ের সঠিক তথ্য গোপন করে এসেছে।

‘অফশোর’ কী: সরকারকে না জানিয়ে নিজের দেশের বাইরে বেনামে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করাকেই সহজভাবে ‘অফশোর’ বলা হয়। আর্থিক ও আইনগত সুবিধা আদায় ছাড়াও কর দায় এড়াতেই এই ‘অফশোর’ কারবার।

‘মোসাক ফনসেকা’: ২০১২ সালে মোসাক ফনসেকাকে ‘অফশোর অর্থায়ন’এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলো প্রভাবশালী পত্রিকা ‘দ্য ইকোনোমিস্ট’। নিজেদের সম্পর্কে কোনো তথ্যই এতোদিন তারা প্রকাশ করতো না। শেল কোম্পানিগুলোকে সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান পানামা ভিত্তিক এই আইনবিষয়ক সংস্থাটি।  ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের মতো ‘ট্যাক্স হেভেন’ বা কর অভয়াশ্রম বলে পরিচিত প্রায় সব জায়গাতেই তাদের কর্মকাণ্ড চালু আছে।

‘শেল কোম্পানি’: ‘শেল কোম্পানি’ এমন এক ধরনের প্রতিষ্ঠান যাদের নিজস্ব কোনো ব্যবসা নেই। তবে এসব প্রতিষ্ঠান আইনগতভাবে বৈধ। তারা শুধু অন্যকে বেনামে অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়। তবে কে বিনিয়োগ করেছে তা যাতে কোনোভাবে বের করা না সেটি নিশ্চিত করে এইসব ‘শেল কোম্পানি’।

তবে দোষ কোথায়? ‘শেল কোম্পানি’ আইনগতভাবে বৈধ হলেও এগুলোতে টাকা খাটানো ব্যক্তিরা কিন্তু নিজ নিজ দেশের আইনের বাইরে নয়। যদি এধরণের বিনিয়োগে কোনো দেশের রাজস্ব কর্তৃপক্ষের বাধা থাকে তবে বিনিয়োগকারী ব্যক্তি অবশ্যই শাস্তি পাওয়ার যোগ্য।