ঘূর্ণিঝড় মোরায় বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি আশ্রায়ণের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-ইউএনএইচসিআর।
বঙ্গোপসাগরে আঘাত হানা মোরায় দেশ দুটির হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত সহ অনেক রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় বাসিন্দা ঘরছাড়া হয়েছে। তাদের পুনর্বাসনে ইউএনএইচসিআর কাজ করছে বলে সংগঠনটি জানিয়েছে।
ইউএনএইচসিআর জানায়: মোরায় কক্সবাজার এবং মায়ানমারের রাখাইন এলাকায় অনেক লোক আহত হয়। গত বুধবার কক্সবাজারের কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে ১১ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়া মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় রাখাইন রাজ্যে পানির তীব্র স্রোতে ১০ বছরের এক শিশু নিখোঁজ হয়।
কক্সবাজার এবং নয়াপাড়া ক্যাম্পে মাটি, বাঁশ, প্লাস্টিকের কাগজ এবং টিনের তৈরি শরণার্থীদের অধিকাংশ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্কুল, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সহযোগীদের নিয়ে তারা অস্থায়ী আশ্রয়স্থল এবং স্থানীয় গ্রামগুলোর শরণার্থী শিবিরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে।
মিয়ানমার সরকারও ইউএনএইচসিআর ও অন্যান্য মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পর্যবেক্ষণ করছে। সেখানকার কেন্দ্রীয় রাখাইন রাজ্যের শত শত আশ্রয় কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসে পড়েছে ১৮৬টি আশ্রয় কেন্দ্র। এছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ছে আরো ৩৩৯টি।
দুটি দেশেই ইউএনএইচসিআর ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনে কাজ করছে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী বৃষ্টির কারণে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় রাখাইন রাজ্যের কিছু এলাকা ভূমিধস এবং নাদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ এবং টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরের ছোট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্ধকারে সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা উদ্বেগজনক হয়ে পড়েছে।
এসব এলাকায় জরুরী আশ্রয় উপকরণের প্রয়োজন। কিছু কিছু শরণার্থী ইতোমধ্যে তাদের ঘরবাড়ি মেরামত করেছে। অনেককে খোলা স্থানে থাকার ব্যবস্থা করতেও দেখা গেছে। এছাড়া ইউএনএইচসিআর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে খাদ্য, পানি এবং টয়লেলেট নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা শনাক্ত করছে। অন্যান্য প্রয়োজনীয়তাও পরবর্তীতে শনাক্ত করা হবে বলে তারা জানিয়েছে।
এ অবস্থায় ইউএনএইচসিআর জাতিসংঘের জরুরী ত্রাণ সহায়তা ভান্ডারের (সিইআরএফ) দুটি দেশের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহায়তা চেয়েছে। তারা নিজ উদ্যোগে স্বাস্থ্য সেবা সহ প্লাস্টিকের কাগজসহ অন্যান্য উপকরণ প্রদান করছে। এছাড়া ইউনিসেফের সহায়তায় তারা স্কুল পুননির্মাণে সহায়তা করছে। সরকারের সহায়তায় ইউএনএইচসিআর পরবর্তীতেও মানবিক সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে।