
কোপা আমেরিকার গ্রুপ পর্যায়ে প্রথম ম্যাচে ‘ওয়াইড-ওপেন’ ফুটবল খেলে জয় পেয়েছে ব্রাজিল। নেইমার-কস্তার গোলে পেরুকে ২-১-এ পরাজিত করে কোপায় শুভ সূচনা করেছে কার্লোস দুঙ্গার শিষ্যরা।
এর আগে দুঙ্গা যখন ব্রাজিল দলের কোচ ছিলেন তখন তিনি ছিলেন রক্ষণাত্নক। নতুন করে দায়িত্ব নেওয়ার পরে বদলে ফেলেছেন নিজের কৌশল, দলকে ঢেলে সাজিয়ে উপহার দিয়েছেন নতুন ব্রাজিল দল।
প্রথমার্ধ থেকেই আক্রমাত্নক মেজাজে ছিলো নেইমার বাহিনী, যদিও প্রথম গোল হজম করতে হয়েছে তাদের। তবে ঘুরে দাড়াতে সময় লাগেনি, দানি আলভেসের ঠেলে দেয়া ক্রসে ঠিকই জালে বল জড়িয়েছেন তুরুপের তাস নেইমার। আলভেসকে রাইট উইং দিয়ে উঠে আসতে দেখা গেছে বারবার এবং তার ব্যাকআপ হিসেবে ছিলেন মিডফিল্ডাররা। দানি আলভেস প্রমাণ করেছেন আবারও যে ক্রসিং-এ তার জুড়ি মেলা ভার।
ব্রাজিলের রক্ষণভাগ প্রায় মাঝমাঠে এসে খেলেছে বলে পেরু’ও যেমন সুযোগ সৃষ্টি করতে পেরেছে, খেলাটিও হয়েছে দারুণ আক্রমণাত্মক ও দর্শকদের জন্য উপভোগ্য। কখনো ৩-৫-২ আবার কখনো ৪-৪-২ পদ্ধতিতে খেলেছে দু্ঙ্গার দল। দানি আলভেসের সঙ্গে উইলিয়ানকেও মাঠজুড়ে দেখা গেছে। এমনকি ফেলিপে লুই’ও পেরু’র ডিফেন্সে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন।

ব্রাজিল তার খেলার গতিও বাড়িয়ে ‘ফার্স্ট-টাইম’ পাসিং , ‘ওয়ান-টু-ওয়ান’ এবং অনেক বেশি ‘স্কয়ার’ পদ্ধতিতে পাস দিয়ে মাঠ-কে অনেকটাই বড় করে নিয়েছে নিজেদের জন্য।
মাঝে মাঝে পেরুর ‘কাউন্টার অ্যাটাক’ সামলাতে বেগ পেতে হয়েছে হলুদ শিবিরের। তবে হঠাৎ সামলে নিয়ে জটলার ভেতর’ও ব্রাজিল রক্ষণশিবিরে স্বাচ্ছন্দ্য এবং বোঝাপড়া ছিলো দৃষ্টিনন্দন।
ব্রাজিলের এবারের দলটি বলা যেতে পারে ইউরোপীয় মেজাজের লাতিন দল। শুধু দুঙ্গা’র কৌশলই নয়, ব্রাজিল তারকা নেইমারের খেলায়ও ইউরো-ল্যাতিন ফুটবলের ‘ভিন্ন’ আমেজ ছিলো উপভোগ্য। পিছিয়ে থেকেও মাত্র দুই মিনিটের মাথায় সমতা এনে দেওয়া ও কস্তাকে ৯২ মিনিটে সেই জয়সূচক গোলের অসাধারণ থ্রু-পাস, সবকিছুতেই বুক উচিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন নেইমার জুনিয়র। বিশ্বকাপের ব্যর্থতা আর ইনজুরির স্মৃতি ফুটবল প্রেমীদের মন থেকে মুছে দিতেই হয়তো গুরু-শিষ্যের এই বদলে যাওয়া।