
মাসব্যাপী বঙ্গবন্ধু বিপিএলের পর্দা নামল আজ। সাকিবের ফরচুন বরিশালকে কাঁদিয়ে ১ রানে ফাইনাল জিতে তৃতীয়বার শিরোপা ঘরে তুলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
শুক্রবার পর্দা নামা বিপিএলের এবারের আসরের খেরোখাতায় এসেছে পরিবর্তন। রেকর্ড বইয়ের কাটাকুটিতে যুক্ত হয়েছে সেরাদের নাম। ছিল চার- ছক্কার ছড়াছড়ি। ছিল কোয়ালিটি বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের দুর্দান্ত প্রদর্শনী।
এক নজরে দেখে নেয়া যাক এবারের আসরের যা কিছু সেরা-
চ্যাম্পিয়ন: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক: ইমরুল কায়েস। অধিনায়ক হিসেবে ভিক্টোরিয়ান্সদের তৃতীয় শিরোপা উচিয়ে ধরলেন টাইগারদের সাবেক ওপেনার। পুরো আসরে ব্যাটের নিজের জাত চেনাতে না পারলেও নেতৃত্বের গুণে দলকে জিতিয়েছেন অষ্টম আসরের ট্রফি।
ফাইনাল সেরা: সুনিল নারিন। মূলত এই ক্যারিবিয়ানের অলরাউন্ড নৈপুণ্যেই তৃতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। নিজেদের দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে ব্যাট হাতে তাণ্ডব দেখানোর পর ফাইনালেও তোলেন ঝড়। ২৩ বলে খেলেন ৫৭ রানের মারকাটারি ইনিংস। দলের বাজে সময়ে বোলিংয়েও দেখিয়েছেন ক্যামিও। চার ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৫ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন দুই উইকেট।
টুর্নামেন্ট সেরা: সাকিব আল হাসান। ব্যাট-বলে দুর্দান্ত আসর কাটানো ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক দলকে ফাইনালে তুলতে ছিলেন অন্যতম প্রভাবক হিসেবে। অলরাউন্ডিং পারফর্মে গড়েছেন ম্যাচ সেরা হওয়ার বিশ্ব রেকর্ড। বোলিংয়ে দলের হয়ে ১১ ম্যাচে শিকার করেছেন ১৬ উইকেট। যা আসর সেরাদের তালিকায় তিন নম্বর। ব্যাট হাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন অন্যতম এই ক্রিকেটার। ১১ ম্যাচে করেছেন ২৮৪ রান। ব্যাট-বলের এমন দুর্দান্ত নৈপূণ্যই তাকে এনে দিয়েছে আসরের সেরাদের সেরার খেতাব।
সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক: উইল জ্যাকস। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সদের হয়ে ওপেনে দুর্দান্ত শুরু এনে দেওয়া এই ইংলিশম্যান গড়েছেন টুর্নামেন্টের সর্বাধিক রান। ১১ ম্যাচে ৪১.৪০ গড়ে ব্যাট করে যোগ করেন ৪১০ রান।
সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি: মোস্তাফিজুর রহমান। কুমিল্লার এই পেসার দলকে তৃতীয় শিরোপা জেতাতে রেখেছেন অনবদ্য ভূমিকা। বল হাতে কাটার, সুইং এবং স্লোয়ারে পরাস্ত করেছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের। ১১ ম্যাচে ৩৮.৪ ওভারে নিয়েছেন আসর সেরা সর্বোচ্চ ১৯ উইকেট। ওভার প্রতি খরচ করেছেন ৬.৬২ রান।
সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ: লেন্ডল সিমন্স। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সিলেট সানরাইজার্সের হয়ে আসরের সর্বোচ্চ রান করেন এই ক্যারিবিয়ান। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৬৫ বলে খেলেছিলেন ১১৬ রানের ক্যামিও ইনিংস। আসরে আরও তিনটি শতক হলেও সিমন্সের শতকই এবারের আসরের সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত সংগ্রহ।
সেরা বোলিং ফিগার: ২৭ রানে ৫ উইকেট, মোস্তাফিজুর রহমান। চট্টগ্রামের বিপক্ষে ম্যাচে মিরপুরে আসরের সেরা বোলিং করেন এই পেসার। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের উইকেট শিকারির তালিকায়ও আছেন সবার উপরে।
সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড়: আন্দ্রে ফ্লেচার। খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলা এই ক্যারিবিয়ান ৫৮.৫৭ গড়ে ব্যাট করে তুলেছেন ৪১০ রান। যা আসরের সেরা ব্যাক্তিগত রানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সর্বোচ্চ ফিফটি: তামিম ইকবাল ও উইল জ্যাকস, চারটি করে ফিফটি। মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার হয়ে খেলা টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম চার ফিফটিতে করেছেন ৪০৭ রান, ছিল শতক ছাড়ানো একটি ইনিংস। চট্টগ্রামের হয়ে উদ্ধোধন করা জ্যাকস হাকিয়েছেন চারটি ফিফটি। ১১ ম্যাচে ৪১.৪০ গড়ে ৪১০ রান করে হয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও।
এক ম্যাচে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট: আলাউদ্দিন বাবু। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে ম্যাচে ৭ বলে ২৫ রান করেছেন বাবু।
সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকিয়েছেন যিনি: আন্দ্রে ফ্লেচার। ১১ ম্যাচে ২১ টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ক্যারিবিয়ান এ ব্যাটার।
এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছয় হাঁকিয়েছেন যিনি: মইন আলী। ইংলিসব খুলনার বিপক্ষে এক ম্যাচে ৯ ছক্কা হাঁকিয়েছেন মইন।
শূন্যতে সর্বোচ্চবার আউট: মিজানুর রহমান। সিলেটের মিজানুর রহমান দুই ম্যাচ খেলে দুবারই শুন্য রানে আউট হয়েছেন।
সেরা ইকোনমি রেট: জ্যাক লিনটট। ৩ ম্যাচে ৫ ইকোনোমি রেটে ১১ ওভার করেছেন ইংলিশ এ বোলার।
এক ইনিংসে ৪ উইকেটের বেশি: এক ইনিংসে ৪ উইকেট বা তার বেশি পেয়েছেন ৬ জন বাংলাদেশী বোলার। ৬ জনের তালিকায় মোস্তাফিজ শরিফুলদের সাথে আছেন মৃত্যুঞ্জয়, রানা, মিরাজ ও নাজমুল ইসলাম অপু।
এক ম্যাচে বেস্ট ইকোনমি রেট: নাহিদুল ইসলাম। বরিশালের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ৪ ওভারে ১.২৫ ইকোনমি রেটে ৫ রান দিয়েছেন তিনি।
সবচেয়ে খরুচে বোলার: সিরাজ আহমেদ। বরিশালের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ৪ ওভারে ৫৬ রান দিয়েছেন বাহাতি এ পেসার।
সেরা উইকেটকিপার: নুরুল হাসান সোহান। ১০ ম্যাচে ১৬ টি ডিসমিসাল করেছেন সোহান।
সবচেয়ে বেশি ক্যাচঃ ইমরুল কায়েস। ১১ ম্যাচে ১৭ টি ক্যাচ নিয়েছেন শিরোপাজয়ী অধিনায়ক।
সর্বোচ্চ রানের জুটি: আন্দ্রে ফ্লেচার ও মেহেদী হাসান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ১৮২ রানের জুটি গড়েছেন তারা।
সর্বোচ্চ দলীয় রান: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। পুরো টুর্নামেন্টে ১ বারই ২০০ রানের গন্ডি পেরিয়েছে কোনো দল। সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে ২০২ রান করেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
সর্বোচ্চ রানের ম্যাচ: চট্টগ্রাম বনাম সিলেটের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ। দুই দল মিলে ৩৮৮ রান করেছিল।
সরবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে ৬৫ রানের জয় পেয়েছে কুমিল্লা।