— বদিকে চেনেন?
— অবশ্যই চিনি। সে একজন ………….।
— আপনি তো মশাই দারুণ ওঁচা, লাফ মেরে দিলেন খোঁচা। আবদুর রহমান বদিকে তো চেনেন না মোটে, আর বদনাম করছেন কনফিডেন্টে।
— ….. সম্রাট নাতো কি ধোয়া তুলসী পাতা?
— অনেকটা তাই বাবা, বদি বাবা। না হলে কি সুযোগ পেত অমুক-তমুকের সাথে সমুদ্র জলে নামা!
— হ্যাঁ, হ্যাঁ দেখেছি সে ছবি পত্রিকার পাতায় পাতায় আর টেলিভিশনে পর্দায়। সেদিন যেন দেখলাম আরেকটি ছবি, মন্ত্রী বাহাদুর রসগোল্লা খায়, নিমকি হাতে বদি মিয়া বায়োজিদ বোস্তমী প্রায়।
— তাহলে বাছা এবার বল, খারাপ মানুষ কি পারে উনাদের পাশে দাঁড়াতে বুক ফুলিয়ে?
— আবার দেখো সবার সাথে বদি বসে ইয়াবা নির্মূলে যুদ্ধ ঘোষণা করে। বলতো কে এমন সাহস দেখাতে পারে? নিজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা সে তো মস্ত বিষয় ভারী। অযথা কেন বদি বাবার সম্রাট বলে আহাজারি?
— কিন্তু খবরে দেখি যে, দেশের ৮০ ভাগ ইয়াবা আসে ওই পথে, সেই ইয়াবাই প্রধানত যুবকূল কেনে।
— সব মিথ্যে কথা, বদিকে ডোবাতে রটনা গঞ্জনা। মোটেও মানবো না বদিকে নিয়ে মিডিয়ার বাঁদরামি। অযথা যখন তখন তাকে নিয়ে টানাটানি। সে ধোয়া তুলসী পাতা, তাকে নিয়ে বলা যাবে না যা তা।
আমরাও যা তা বলতে চাই না। শুধু পত্রিকায় প্রকাশিত কিছু অভিযোগ তুলে ধরতে চাই:
১. মানব পাচার, ইয়াবা ও রোহিঙ্গাদের ভুয়া পরিচয়পত্র দেয়া — এই তিন অপরাধকাণ্ডে বেসামাল পর্যটন নগর কক্সবাজার। সরকারের খাতায় এই তিন অপরাধেরই প্রধান পৃষ্ঠপোষক কক্সবাজার-৪ আসনের (উখিয়া-টেকনাফ) এমপি আবদুর রহমান বদি। সঙ্গে আছে তার ছয় ভাইসহ ২৬ জন কাছের ও দূরের আত্মীয়।
২. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা টেকনাফের শীর্ষ ৭৯ মানব পাচারকারীর তালিকায় বদির নাম আছে ১ নম্বরে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এ তালিকা করা হয়। একই বছরের ডিসেম্বরে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে আরেকটি তদন্ত হয়। তাতে তার আট আত্মীয়কে মানব পাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
৩. এর আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের করা ইয়াবা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকায়ও বদিকে মাদকের মূল পৃষ্ঠপোষক বলা হয়। ওই তালিকায় তার ১৭ জন আত্মীয়ের নাম আছে।
৪. আর রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে সহায়তাকারীদের তালিকায়ও তিনি আছেন ১ নম্বরে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২০১৩ সালের অক্টোবরে এ তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছিল। (সূত্র: প্রথম আলো, ১৭ জুন ২০১৫)।
৫. এমপি’র যে আত্মীয়রা মানব পাচারকারীদের তালিকায়: তার বোন শামসুন্নাহারের ছেলে সায়েদুর রহমান নিপু (২৪), বোনের দেবর হামিদ হোসেন (৪০), চাচা-শ্বশুর জহিরউদ্দিন এবং বদির দুই বেয়াই আক্তার কামাল ও শাহেদ কামাল।
৬. এছাড়া পুলিশের প্রতিবেদনে মানব পাচারকারী ও হুন্ডি ব্যবসায়ী হিসেবে তার খালাতো ভাই মং মং সেন, বেয়াই মো. হারুন (৪৫), আক্তার কামাল (৩৫), সাইদ কামাল (৩০), হামিদ হোসেন, হাসু ওরফে শামীম, মফিজুর রহমান ও তালই জহিরউদ্দিনের নাম আছে।
৬. ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মীয় তালিকায় আছে তার ভাই আবদুল আমিন (৩৫), শফিকুল ইসলাম ওরফে ফয়সাল রহমান (২০), বোন শামসুন্নাহার, বোনের ছেলে সায়েদুর রহমান ওরফে নিপু, চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলম (৩৫), ফুফাতো ভাই কামরুল ইসলাম ওরফে রাসেল, ফুফাতো ভাই নুর আলম (৩২), শামীম, খালাতো ভাই মং মং সেন, বেয়াই আবদুল জব্বার (৪০), বেয়াই আফসার, সৈয়দ হোসেন ও মফিজুর রহমান। (সূত্র: প্রথম আলো)
কিন্তু, আমরা জানি, এগুলো ফটোশপে এডিট করা যায়।