পর্যটনে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ জায়গাগুলোর একটি তালিকা তৈরি করেছে ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ডেস্টিনেশন ট্রিপ’। সেখানে নিকৃষ্টতম ১০টি শহরের তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ‘ঢাকা’। তালিকার উপরের দিকে অবস্থান করছে ইউক্রেনের কিয়েভ ও হাইতির পোর্ট অব প্রিন্স। নিকৃষ্টতম ১০টি পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনের কিয়েভ, হাইতির পোর্ট অব প্রিন্স, সিরিয়ার দামেস্ক, সোমালিয়ার মোগাদিসু, উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়ং, মেক্সিকোর সিউদাদ জুয়ারেজ, কলম্বিয়ার বোগোতা, বাংলাদেশের ঢাকা, লিংকনশায়ারের স্কেগনেস এবং পাপুয়া নিউগিনির পোর্ট মোরেসবি। পরিবেশ দূষণ, অতিরিক্ত জনসংখ্যা, যানজট, মাদক আর রাতের বেলায় নিরাপত্তাহীনতাসহ বিভিন্ন কারণে ওই তালিকায় ঢাকার স্থান হয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনের নানা সভা-সমাবেশ, মেলা-প্রদর্শনীসহ নানা কারণে যানজট অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। এর সঙ্গে বর্তমানে যুক্ত হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত ধুলাবালি। ফ্লাইওভার নির্মাণ ও মেট্রোরেলসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার রাস্তা খোড়াখুড়ির সঙ্গে নগরজুড়ে চলা বেসরকারি বিভিন্ন নির্মাণ কাজের কারণে ধুলার আস্তরণে প্রায় ঢেকে গেছে পুরো রাজধানী। এ জন্য নাকে বিশেষ ধরণের মাস্ক আর রুমাল দিয়ে বেশীর ভাগ মানুষকে চলাচল করতে দেখা যায়। এছাড়াও রাজধানীর চারপাশে অপরিকল্পিত শিল্পায়নে খাল, নদী-নালাসহ জনপদ বিষাক্ত হয়ে গেছে। একটি দেশের রাজধানীর উপরে প্রয়োজনে যে পরিমাণ স্বাভাবিক চাপ থাকা দরকার, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশী চাপ নিয়ে ঢাকা অনেকটা বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। ধুলায় আর যানজটের কারণে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, হাঁপানি এবং চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে নগরবাসী। বিশেষ করে শিশু-বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছে বেশী। এসব অসুখের পেছনে মধ্য ও নিম্নবিত্তদের চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে জীবনযাত্রার বাজেট সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। সরকার ও নগর সেবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে যানজট ও ধুলা দূষণের জন্য স্বল্পমাত্রার বিভিন্ন খরুচে উদ্যোগ নিতে দেখা গেলেও তা প্রায় কোনো কাজেই আসছে না। রাজধানী ঢাকার উপর থেকে চাপ কমানো ও পরিবেশ উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী কোনো পরিকল্পনা ও উদ্যোগ না নিলে এ শহর মৃত্যুকূপে পরিণত হতে বেশী সময় লাগবে না। আমরা আশাকরি রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুতই একযোগে পদক্ষেপ নিয়ে এ অবস্থা পরিবর্তনে উদ্যোগী হবেন।