অভিষেক টেস্ট সিরিজে ১৯ উইকেট নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারের এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে ১৯ বছরের এই তরুণ অফস্পিনারের। গত অক্টোবরে মিরপুরে ইংল্যান্ড-বধের নায়ক ধীরে ধীরে হচ্ছেন পরিণত। জাতীয় দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের সঙ্গে থেকে শিখছেন প্রতিনিয়ত। ছোট ছোট অভিজ্ঞতায় হচ্ছেন সমৃদ্ধ।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান টেস্টের প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন তিন উইকেট। দুর্দান্ত বল করে স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ম্যাথুউ ওয়েডকে বোকা বানিয়ে সাজঘরে পাঠিয়েছেন। তার মধ্যে স্মিথের উইকেট নিয়েছেন পরিকল্পনা করে। মিরাজ যে পরিণত হয়ে উঠছেন সেটি তার বোলিংয়েই ধরা পড়েছে। অভিষেক সিরিজের মতো হুটহাট করে নয়; অস্ট্রেলিয়া টেস্টে দেখা গেছে বুদ্ধিদীপ্ত মিরাজকে।
দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিরাজ নিজেও মানলেন সেটি, ‘আমাকে প্রতিদিনই অনেক উন্নতি করতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক কঠিন। এখানে সবাই বল বুঝে ফেলে। আমার কাছে মনে হয়, ছোট ছোট অভিজ্ঞতা হয়েছে। কোন ম্যাচে কীভাবে এগোতে হবে, কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে বল করতে হবে, এগুলো বুঝতে পারছি। সামনাসামনি অনেক কিছু দেখছি, সিনিয়ররা পরামর্শ দিচ্ছেন। ছোট ছোট অভিজ্ঞতাগুলোয় আমি সমৃ্দ্ধ হচ্ছি।’
মিরপুরেই এই উইকেটেই (চার নম্বর) ইংল্যান্ডকে বধ করেছিল বাংলাদেশ। মিরাজ দুই ইনিংসেই নিয়েছিলেন ৬টি করে উইকেট। তখনকার সাফল্য মাথায় রেখে এবারও করা হয়েছে স্পিন ট্র্যাক। তাতে সাফল্যও এসেছে বেশ। টাইগারদের করা ২৬০ রানের জবাবে অজিরা করতে পেরেছে ২১৭ রান। ৪৩ রানের লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনার সৌম্যর উইকেট হারিয়ে মুশফিকের দল করেছে ৪৫ রান। ৮৮ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন তামিম ও নাইটওয়াচম্যান হিসেবে তিনে নামা তাইজুল।
অস্ট্রেলিয়ার ১০ উইকেটের মধ্যে ৯টিই নিয়েছেন স্পিনাররা। অন্যটি রান আউট। স্পিনে বাংলাদেশের পড়েছিল ৭ উইকেট। দিনের খেলা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে সৌম্যর যে উইকেটটি পড়ল সেটিও অ্যাগারের স্পিনে।
এবার কী তাহলে আরও বেশি ট্র্যাক করা হয়েছে? মিরাজের সোজাসাপটা উত্তর, বোলাররা ভাল করেছে বলেই সাফল্য এসেছে।
‘আমার কাছে মনে হয়, ওরকম পার্থক্য আহামরি কিছু না। একইরকম আছে। সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটা, আমাদের বোলাররা খুব ভালো বোলিং করছে। উইকেট যে রকমই হোক না কেন, বোলাররা ভাল জায়গায় বোলিং না করলে উইকেট পাওয়া অনেক কঠিন। সাকিব ভাই কিন্তু অসাধারণ বোলিং করেছেন। তার পর ছোট ছোট আমি, তাইজুল অবদান রেখেছে। মুস্তাফিজ…উইকেট পায়নি,কিন্তু খুব ভালো বোলিং করেছে। রান নিয়ন্ত্রণ করেছে। উইকেট যেরকমই হোক, বোলাররা দায়িত্ব নিয়ে ভালো জায়গায় বল করে তাহলে ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে যায়।’
ছবি: সাকিব উল ইসলাম।