বড় পুরনো জাহাজের আদলে নির্মিত জনপ্রিয় চট্টগ্রামের বই বিপনী ‘বাতিঘর’। আয়তন ৩০০০ বর্গফুট। এবার জাহাজের আদল ছেড়ে মুঘল স্থাপত্য রীতি লালবাগের কেল্লায় ভর করেছে ‘বাতিঘর’। বুড়িগঙ্গা পাড়ের ঢাকায়। বিশ্বসাহ্যিকেন্দ্রের ৫০০০ বর্গফুট জায়গায় নতুন শাখা বিস্তার করেছে এক যুগ আগে চেরাগী পাহাড় মোড়ে মাত্র ১০০ বর্গফুট পরিসরে শুরু করা স্বপ্ন।
২৯ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শতাধিক বিষয়ে ১০০০০ লেখক এবং ১০০০ দেশী বিদেশী প্রকাশনা সংস্থার ১ লক্ষ বই নিয়ে যাত্রা শুরু করবে বইয়ের ‘বাতিঘর’। যেখানে থাকছে সংরক্ষিত প্রকাশক কর্নার, শিশু-কিশোর কর্নার, লিটল ম্যাগাজিন এবং সাহিত্য সাময়িকী কর্নার। উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে অঙ্গসজ্জায় ব্যতিব্যস্ত ঢাকার বাতিঘরে বুধবার দুপুরে আয়োজন করা হয়েছিল সংবাদ সম্মেলনের। এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ও বাংলাদেশ জ্ঞান সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার দীপঙ্কর দাশ বলেন, কেবল বাণিজ্যিক ভাবনা নিয়ে আমরা বাতিঘর পরিচালনা করি না। বরং বই পড়া এবং কেনার অভ্যাস বা জ্ঞান বিকাশের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য ছিল। সে জায়গায় চট্টগ্রামে পাওয়া সাফল্য আমরা রাজধানীতে ভাগ করে নিতে চেয়েছি। সেটাই আমাদের মূল পরিচিতি। বইয়ের পরিবেশ তৈরীর জন্য, ক্রেতা বিক্রেতার সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং যে কোন বই সহজে হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের এ উদ্যেগ।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, আমি বিস্মিত হয়েছি এমন বইয়ের দোকান দেখে। ৪০ বছর ধরে চেষ্টা করে চলেছি। তবে বইয়ের সংস্কৃতি সে অর্থে এখনও গড়ে ওঠেনি। ১৮ কোটির দেশে বইমেলা শুধু বাংলা একাডেমী কেন্দ্রিক না থেকে তা সারা দেশে নিয়ে যেতে হবে। জ্ঞানভিত্তিক সমাজের মূল দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সেখানে যা ফাঁকফোকর থাকে তা পূরণ করে বাকীরা। ‘বাতিঘর’ তেমনই এক প্রয়াস। সৃজনশীলতার বড় অনুসঙ্গ আড্ডা। এখানে বই পড়া, কেনা এবং আড্ডার সুযোগ রয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারী থেকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এ জায়গায় ‘বাতিঘর’ ঢাকার অন্দরসজ্জা শুরু হয়। এর আভ্যন্তরীণ সজ্জা পুরান ঢাকার প্রান্তিক শিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে করেছেন শাহীনুর রহমান। আলোকসজ্জা করেছেন নাসিরুল হক খোকন ও জুনায়েদ ইউসুফ।