স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের ক্রীড়া বিনোদনের প্রধান কেন্দ্র ছিল ঢাকা স্টেডিয়ামসহ পল্টন ময়দানের বিশাল এলাকা। ঢাকার ফুটবল, ক্রিকেট লিগ নিয়ে স্টেডিয়ামের উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়তো ৫৬ হাজার বর্গমাইল জুড়ে। আবাহনী-মোহামেডান মধুর প্রতিদ্বন্দ্বীতা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়তো পুরো দেশ।
আর বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের ক্লাবভিত্তিক ক্রীড়া চর্চা পার করছে কঠিন সময়। গ্যালারি উপচে ভরা দর্শক এখন শুধুই স্মৃতি। আবাহনী-মোহামেডানের মতো বড় ম্যাচ থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে দর্শক। ক্লাবভিত্তিক প্রতিদ্বন্দ্বীতা কেন রং হারিয়েছে, কেন দর্শকের আকাল?
ঢাকার মাঠের সোনালী দিনের স্মৃতির সেই ঝাঁপি খুললেন দেশ বিখ্যাত আলোকচিত্রী খন্দকার তারেক। এখনো মাঠে যান, ফেরেন এক বুক হতাশা নিয়ে। সালাউদ্দিন-সালাম মুর্শেদিরা যেভাবে খেলতেন, সেই ধরনের পাস দিয়ে খেলা এখন আর হয় না বলে ফুটবল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন স্বনামধন্য এ আলোকচিত্রী।
এখন ফুটবল ম্যাচ মানেই শূন্য গ্যালারি। সাবেক তারকাদের অভিযোগের আঙুল সাংগঠনিক দুর্বলতা আর পারফরম্যান্সের অধোগতির দিকে। সাবেক তারকা ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলামের অভিযোগ, খেলা দেখে মনের খোরাক না মেটায় ঘরোয়া ফুটবল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দর্শকরা। হারানো সোনালী দিনের মত ক্যারিশমাটিক ফুটবলারের অভাবও বোধ করছেন আসলাম। এই সোনালী যুগ আর কোনদিন ফিরে আসবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান আরেক সাবেক তারকা ফুটবলার কায়সার হামিদ।
সময়ের সাথে তাল মেলাতে না পারার জন্য বাফুফে’র ব্যর্থতাকেও দায়ী করেছেন সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালি। আবাহনী-মোহামেডানের মত বড় ক্লাবের অবহেলার কারণে ফুটবলের অবক্ষয় বলে মনে করেন এ তারকা সাবেক ফুটবলার।
কারণ আছে আরো অনেক। দর্শকের রুচি ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন, পেশাগত ব্যস্ততা এবং আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবের কথা বলেছেন সাবেক তারকারা। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলালের মতে আকাশ সংস্কৃতির কারণে দেশিয় খেলাধুলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশের দর্শকরা। আর সমাজ ও ব্যক্তিগত নানা পারিপার্শ্বিক চাপে পড়ে খেলোয়াড়ের পরিমাণ কমছে বলে দাবি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসানের।
ক্রীড়াবিদ ও সংগঠকরা বলছেন, ঢাকার বাইরের জনপদে মাঠের ফুটবল এখনো উন্মাদনা জাগায়। তাই যেতে হবে সেসব জায়গায় যেখানে গ্যালারিতে ওঠে দর্শক জোয়ার।
ভিডিও রিপোর্ট-