ওবায়দুল কাদেরের সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা এবং কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য দুঃকজনক ও লজ্জার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
তিনি বলছেন, ‘ওবায়দুল কাদের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান। আমরা দেখেছি যারা এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনি, স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে। ওই পাকিস্তানী দোসর-যুদ্ধাপরাধীরা মন্ত্রী হয়ে গাড়িতে বাংলাদেশ পতাকা উড়িয়ে৷ এরপর এখন ওই স্বাধীনতার বিরোধীকারীদের ওবায়দুল কাদের সাহেবের সঙ্গে তুলনা অত্যান্ত দুঃখজনক ও লজ্জার।’
বুধবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
হানিফ বলেন: খালেদা জিয়া আদালতের দণ্ডপ্রাপ্ত একজন কয়েদি। তার চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবে কারা কর্তৃপক্ষ। কারাগারে যে সকল কয়েদিরা রয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা কোথায়-কখন-কিভাবে হবে সেটা পুরোপুরি কারা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। এ নিয়ে কোন রাজনৈতিক দলের কোনো বক্তব্য থাকতে পারে না। বেগম জিয়ার সু-চিকিৎসার জন্য যেটা প্রয়োজন সর্বোচ্চটাই কারা কর্তৃপক্ষ করছে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবি করেন তিনি।
এসময় ওবায়দুল কাদেরের সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা সঙ্গে খালেদা জিয়ার চিৎসার তুলনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য রেখেন তার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন: বিএনপি নেতারা যখন এই রেফারেন্স টেনে বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে করা হচ্ছে। তাদের এই রেফারেন্সটা অত্যন্ত দুঃখজনক, এটা দেশের জনগণকে কষ্ট দেয়।
তিনি আরও বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বশীল একজন মন্ত্রী তার যে অবস্থা সেটা অত্যন্ত সংকটাপন্ন ছিল, চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমেই তাকে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। এখানকার চিকিৎসকরা সন্দিহান ছিলেন বর্তমান পরিস্থিতি থেকে যদি অবস্থার আরো অবনতি হয় তাহলে বাংলাদেশের চিকিৎসার সুযোগ নেই। ডাক্তারদের মতামতের প্রেক্ষিতে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
‘‘কিন্তু একটা জিনিস এখানে খুবই দুঃখজনক ওবায়দুল কাদের সাহেব শুধু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক-ই নন, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন; জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। আর যার সাথে তুলনা করা হচ্ছে তিনি, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেননি; যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের অবস্থান করেছে তাদের মন্ত্রী বানিয়ে গাড়িতে দেশের পতাকা তুলে দিয়েছে। যে স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনি তার সঙ্গে একজন মুক্তিযোদ্ধার তুলনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং লজ্জার।’’
একদিকে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য সরকারের মন্ত্রীর দারস্থ অন্যদিকে মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন বিএনপির অস্তিত্ব সংকটের স্মরক বলে এসময় মন্তব্য করেন হানিফ। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক এজেন্ডা বিহীন বিএনপি বিভিন্ন সময় নানা কর্মসূচি দিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের মনে টিকে থাকতে চাইছে বলে দাবি করেন দলটিকে মিডিয়া নির্ভর দল হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।
সবশেষে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন দলের সাধারণ সম্পাদকের স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনায় ওবায়দুল কাদের দ্রুততম সময়ে সুস্থ হয়ে উঠবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন এ নেতা।