এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রোববার (৫ মে) সকাল সাড়ে দশটা থেকে আপিল বিভাগ ও বেলা এগারোটার পর থেকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকাজ বন্ধ থাকবে।
রোববার সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগে এজে মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুর বিষয়টি উত্থাপন করে এক্ষেত্রে আদালত বন্ধ রাখার রীতির বিষয়টি তুলে ধরেন। এসময় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন: আমরা ইতিমধ্যে আপিল বিভাগের সকল বিচারপতি বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সকাল সাড়ে দশটার পর থেকে আপিল বিভাগ ও বেলা এগারোটার পর থেকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকাজ বন্ধ থাকবে।’
গত ২৮ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ ছাড়েন এ জে মোহাম্মদ আলী। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা ২০ মিনিটে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন এ জে মোহাম্মদ আলী। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে রেখে গেছেন। এ জে মোহাম্মদ আলী বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বর্তমান কমিটির সভাপতি ছিলেন। এজে মোহাম্মদ আলীর বাবা এম এইচ খন্দকার স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের প্রথম অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি।
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যরিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
শনিবার বাদ জোহর ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে মরহুমের প্রথম জানাজা শেষে বাদ আসর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী’র দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দীন সরকার, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক ও বর্তমান বিচারপতিবৃন্দ, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক শাহ মনজুরুল হক, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সহ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিত্ব এবং মরহুমের আত্মীয় স্বজন উপস্থিত ছিলেন। এসময় প্রয়াত এজে মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও মেয়ে তার বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চান। জানাজা শেষে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান , অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এ জে মোহাম্মদ আলী’র কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শনিবার সন্ধ্যায় বনানী কবরস্থানে এজে মোহাম্মদ আলীকে দাফন করা হয়।
এ জে মোহাম্মদ আলী ১৯৮০ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৮৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এ জে মোহাম্মদ আলী। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০১ সালের অক্টোবরে তিনি অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০০৫ সালের ৩০ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশের ১২তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৭ সালের ২৪ জানুয়ারি তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে পদত্যাগ করেন।