বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা প্রসঙ্গে মধুর ক্যান্টিনে এক প্রেস ব্রিফিং এ ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
এসময় আবরার হত্যার ঘটনার জন্য লজ্জা ও দুঃখ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বাইরে ব্যক্তিগত কোন কিছুর দায় সংগঠন নেবে না বলেও তিনি জানিয়েছেন। এমনকি সংগঠনের ভেতরে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে নজারদারী অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। তিনি বলেন: হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে ছাত্রলীগ প্রশ্রয় দেয়নি। পলাতক বাকিদের খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান তিনি।
জয় বলেন: আমরা ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করার জন্য। আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দাবী জানাই, পলাতক অপর অভিযুক্তদেরও যেন স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। একইসাথে এজাহারভুক্ত ১৯ জনের বাহিরে আরও যদি কেউ এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকে তাদেরও যেন অনুসন্ধানের মাধ্যমে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হয়। এ পুরো প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে যদি কোন সহযোগিতা প্রয়োজন হয় তা নিঃশঙ্কচিত্তে সর্বোচ্চটুকু করার জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। পাশাপাশি, সাংগঠনিক তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পাদনের সময় শেরে বাংলা হল কর্তৃপক্ষের যে উদাসীনতা ও দায়িত্বহীন ভূমিকা দৃষ্টিগোচর হয়েছে আমরা সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণেরও আহ্বান জানাই।
এছাড়াও লেখক ভট্টাচার্য বলেন:দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য যেন ‘আবরার হত্যা মামলা’টি দ্রুত বিচার আইনের আওতায় এনে সম্পন্ন করা হয়। এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রত্যেকের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হয় সে উপযোগী করে পুরো মামলাটি পরিচালনা করা হয়।
‘জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশে কোন প্রকার অন্যায় করে কেউ রেহায় পাবে সে নজির নেই। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাথে জড়িত কেউ যদি ব্যক্তি উদ্যোগে কোন অপরাধ কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে পরে, তারাও বিচারের হাত থেকে রক্ষা পাবে না; অতীতেও পায় নি, ভবিষ্যতেও পাবে না।’
আবরার ফাহাদ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। রোববার সন্ধ্যার পরে তাকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছে তার সহপাঠীরা। এরপরে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয়তলা থেকে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আবরার ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন, ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া।
আবরার হত্যাকাণ্ডে হলের সিসিটিভি ফুটেজসহ ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ বুয়েট শাখার ১১জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।