আমানত ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনাসহ সার্বিকভাবে ইসলামী ব্যাংক আগের তুলনায় ভাল অবস্থানে রয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যান আরাস্তু খান।
নতুন পরিচালনা পর্ষদের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মতিন, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. জিল্লুর রহমান, পরিচালক সাইফুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল হামিদ মিঞা প্রমুখ।
আরাস্তু খান বলেন, নতুন পর্ষদের এক বছরে ইসলামী ব্যাংকের আমানত ও পরিচালন মুনাফা ব্যাংকের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। আর উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেছে খেলাপি ঋণ।
ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। যা গত বছরের তুলনায় ৭ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা বেশি। অর্থাৎ এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। একই সময়ে ৮ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা নতুন বিনিয়োগসহ মোট সাধারণ বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ। যা গত বছরের চেয়ে ২ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।
এছাড়া গত বছর খেলাপি ঋণ ছিল ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এবার তা শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ কমে হয়েছে ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে এক কোটি ২৫ লাখে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে আরাস্তু খান বলেন, ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক আমদানি, রফতানি ও রেমিটেন্স আহরণ বাণিজ্য করেছে যথাক্রমে ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি, ২৪ হাজার কোটি এবং ২৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, উল্লেখযোগ্য হারে ব্যাংকের প্রশাসনিক ব্যয় কমানো হয়েছে। গত বছরের ৩৩ শতাংশ ব্যয়কে কমিয়ে ৫ দশমিক ০৪ শতাংশে নিয়ে আসা হয়েছে। পাশাপাশি অধিক রেমিটেন্স আহরণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তবে ব্যাংকটির মুনাফা সম্পর্কে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কোনো কিছু বলা যাবে না বলে জানান আরাস্তু খান।
ঘুষের বিনিময়ে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহকদের লোন দেয় না এমন দাবি করে ব্যাংকটির এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এই ব্যাংক স্বচ্ছতার সাথে ঋণ বিতরন করে। ঘুষের বিনিময়ে কাউকে ঋণ বা নিয়োগ দেয় না।
শুরু থেকে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ অত্যন্ত সততার সাথে কাজ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সততার কারণে এই ব্যাংক এখন সবচেয়ে বেশি মুনাফা করতে পারছে। এ পরিষদ নিয়ে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক কখনই এই ইসলামী ব্যাংকের হিসাব-নিকাশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি।
চলতি বছরে ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা কি জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, ভবিষ্যতে ব্যাংকের কার্যক্রম পুরোপুরি অনলাইন ভিত্তিক হয়ে যাবে। সে জন্য প্রযুক্তির উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তারল্যের বিষয়ে ব্যাংকের এমডি আব্দুল হামিদ মিঞা বলেন, এই ব্যাংকে ভিত্তি শক্ত। কখনই তারল্য সংকটে পড়বে না।