জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আপিল বিভাগে বহাল থাকবে কি না তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে।
এই মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বাতিল চেয়ে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি শেষ হওয়ার পর আজ রায়ের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু কার্যতালিকার ৩ নম্বরে থাকা এই বিষটি আদালতের সামনে আসলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আরো কিছু বলবেন বলে একদিন সময় চান।
এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আজ কেন? এটা তো আজ রায়ের জন্য আছে। ওকে, এখনই যা বলার বলুন।’
এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এখনই বলা সম্ভব না, কাগজপত্র লাগবে তো। একটি দিন সময় দিন।’ এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আগামীকাল আমার একজন ব্রাদার (বিচারপতি) থাকতে পারবেন না।’
এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদুর হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ১১টা ৩০ মিনিটে অ্যাটর্নি জেনারেলকে তার বক্তব্য উপস্থাপনে জন্য আদেশ দেন।
এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল আরেকটু সময় চাইলে আদালত ১২টায় সময় নির্ধারণ করেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে উপিস্থিত ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুবু হোসেন, জয়নুল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
আর খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে এই মামলায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সেই সঙ্গে খালেদা তারেকসহ দণ্ডিত সবাইকে মোট ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা জরিমানা করা হয়।
এই রায়ের পরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। পরবর্তীতে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল ও জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া।
এরপর গত ১২ মার্চ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন।
কিন্তু হাইকোর্টের দেয়া সে জামিন বাতিল চেয়ে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেন। এবং গত ১৯ মার্চ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের করা সে আপিল শুনানির জন্য ৮ মে দিন ধার্য করেন।
এরপর গত ৮ ও ৯ মে খালেদার জামিন বাতিল চেয়ে করা আপিলের শুনানি হয়। এরপর আদালত জামিন বিষয়ে রায়ের জন্য ১৫ মে দিন ধার্য করেন।