রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার কারণ নির্ণয় করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে অতিরিক্ত শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, মনোবিদ ও আইনবিদকে নিয়ে এই কমিটিতে রাখতে বলা হয়েছে । আর এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধের উপায় নির্ণয় করে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে এই কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে সুপ্রিম ব্যারিস্টার অনিক আর হক, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা ও আইনজীবী জেসমিন সুলতানা সম্মিলিতভাবে অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনা সংক্রান্ত পত্রিকার প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন। এরপর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দিলেন।
স্কুল পরীক্ষায় নকলের অভিযোগে অপমানিত হয়ে সোমবার আত্মহত্যা করে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫)। রাজধানীর শান্তিনগরে নিজের পরিবারের সাথে থাকা অরিত্রির গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে। অরিত্রির ছোট বোন একই স্কুলের শিক্ষার্থী।
আত্মহত্যার ঘটনার বিষয়ে অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী গণমাধ্যমকে বলেন, রোববার তার মেয়ের পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রির কাছে মোবাইল ফোন পায়। ওই মোবাইল দিয়ে নকল করছে এমন অভিযোগে সোমবার তার বাবা-মাকে নিয়ে অরিত্রিকে স্কুলে যেতে বলা হয়। সে অনুযায়ী সোমবার দিলীপ অধিকারী তার স্ত্রী ও অরিত্রিকে নিয়ে স্কুলে যান।
প্রথমে তারা ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে গেলে ভাইস প্রিন্সিপাল তাদের ‘অপমান’ করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন এবং পরের দিন মেয়ের টিসি (স্কুলের ছাড়পত্র) নিয়ে যেতে বলেন। এরপর দিলীপ অধিকারী প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। প্রিন্সিপালও ভাইস প্রিন্সিপালের মতো আচরণ করেন বলে জানান দিলীপ অধিকারী।
এ সময় অরিত্রি দ্রুত প্রিন্সিপালের কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। এরপর অরিত্রির বাবা-মা বাসায় গিয়ে দেখেন অরিত্রি তার কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় ঝুলছে। প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হলে চিকিৎসক অরিত্রিকে মৃত ঘোষণা করেন।