চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অচলাবস্থা নিরসনে ‘ছাড়’ দিতে রাজি ট্রাম্প

তবুও দেয়াল চাই-ই চাই

একমাস ছাড়িয়ে যাওয়া মার্কিন সরকারের আংশিক অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্তে দেয়াল তৈরির ব্যাপারে নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে নিজের আগের দাবি থেকে বেশ কিছু ‘ছাড়’ দিচ্ছেন তিনি।

এই কথিত ছাড়গুলোর একটি হচ্ছে ড্রিমারদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার সুযোগ দেয়া। ‘ড্রিমার’ বলতে বোঝায় সেসব তরুণ অভিবাসীদের, যারা শিশুকালে বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিল।

শনিবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ ট্রাম্প শুরু করেন অভিবাসীদের আমন্ত্রণ জানানোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের গর্বিত ইতিহাস রয়েছে – এই বলে। কিন্তু এই প্রক্রিয়াটি ‘দীর্ঘ সময় ধরে খুব খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, তাই তিনি এবার কংগ্রেসকে এমন একটি পথ দেখাতে চান যাতে একদিকে যেমন প্রক্রিয়াটিতে লেগে থাকা জট খুলে যাবে, অন্যদিকে প্রশাসনও চলমান শাটডাউন থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।

তারপর তিনি ড্রিমার এবং ‘টেম্পোরারি প্রোটেকশন স্ট্যাটাস (টিপিএস)’ ধারীদের নিয়ে নতুন পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরেন। ড্রিমার ও টিপিএস প্রকল্পের বিরুদ্ধে থাকলেও আপাতত পরিস্থিতি নিজের পক্ষে নিতে সামান্য সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় ৭ লাখের মতো ড্রিমার রয়েছে। তারা ছোটবেলায় কোনো এক সময় অবৈধভাবে বাবামায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে বসবাস শুরু করেছিল। ড্রিমাররা বর্তমানে একটি বিশেষ প্রকল্পের অধীনে বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকছে। এ প্রকল্প তাদেরকে সেখানে কাজ করার সুযোগ দিলেও নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ দেয় না।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই প্রকল্পটি বাতিল করার চেষ্টায় আছেন ট্রাম্প।

কিন্তু এবার প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দিলেন আপাতত প্রকল্পটি বাতিল না করে বরং এর মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়াবেন তিনি, যেন ড্রিমাররা বৈধ ওয়ার্ক পারমিটেই এ সময়টা কাজ চালিয়ে যেতে পারে।

টিপিএসধারীদের ভিসার মেয়াদও তিন বছর বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিন লাখেরও বেশি মানুষ যুদ্ধ বা অন্য কোনো ভয়াবহ বিপর্যয় বিধ্বস্ত দেশ থেকে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছে এবং টিপিএসের অধীনে কাজ করছে।

এতদিন এই পদ্ধতিটিরও বিপক্ষে ট্রাম্প।ডোনাল্ড ট্রাম্প-অচলাবস্থা-ছাড়

এছাড়াও ৮শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরুরি মানবিক সহায়তা, আরও ২ হাজার ৭৫০ জন বর্ডার এজেন্ট ও নিরাপত্তাকর্মী এবং ৭৫টি নতুন অভিবাসন বিচারক টিম নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই ডেমোক্র্যাটদের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তাদের শান্ত করার চেষ্টা এগুলো।

অবশ্য এরপরও খুব একটা লাভ হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। কেননা ট্রাম্পের ভাষণের আগেই ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যানরা আবারও বরাদ্দ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, ভাষণে প্রেসিডেন্ট যেমন ছাড়ের কথাই বলুন না কেন, তারা সেসব মানবেন না।

তবে সবকিছুর পরও তালগাছটা তারই লাগবে! অর্থাৎ দেয়াল তুলতে বাজেট থেকে দাবি করা ৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ থেকে সরতে রাজি নন তিনি।

তিনি ভাষণে আবারও ব্যাখ্যা করেছেন কেন প্রাচীরটি জরুরি এবং জোর দিয়ে বলেছেন, এটি কোনো নিরবচ্ছিন্ন কাঠামো নয়। শুধু যে এলাকাগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে ইস্পাত দিয়ে দেয়াল নির্মাণ হবে।

মার্কিন ইতিহাসে দীর্ঘতম এই ‘শাটডাউন’ বা অচলাবস্থায় এ পর্যন্ত ৮ লাখের মতো সরকারি কর্মী বেতন পাচ্ছেন না।