নূরুল ইসলামের দাদার বাবা এই গাছ লাগিয়েছিলেন। সেই পূর্ব পুরুষের নাম তিনি জানেন না। সাইন বোর্ডে লেখা শতবর্ষী; স্থানীয়রা বলছেন, এই সূর্যপুরী আমগাছের বয়স দু’শ বছর।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর বিশাল গাছটির নিচে আচার বিক্রি করেন ষাট বছর বয়সী সমির উদ্দিন। তিনি বললেন, স্বাধীনতার আগে থেকে এ গাছ দেখে আসছেন তিনি। গাছটির আকার এখনও বাড়ছে বলে জানান সমির উদ্দিন।
বালিয়াডাঙ্গীর এই সুর্যপুরী আমগাছ ৭৪ শতাংশ জায়গাজুড়ে ছড়ানো। স্থানীয়রা বলেন, এটিই সবচেয়ে বড় আমগাছ। গাছটির কথা গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এ তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তারা।
প্রায় একটি পাড়ার সমান জায়গাজুড়ে থাকা আম গাছটি দেখতে প্রতিদিন গড়ে পাঁচশ’র মতো মানুষ আসেন। শীতকালে বনভোজনের মৌসুম এবং আমের সময় দর্শনার্থীর অনেক বেশি হয়।
গাছের নিচে আর চারপাশে কিশোর-তরুণদের আড্ডা জমে। বন্ধু-সঙ্গী-পরিবার নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন অনেকে।
শিশু সন্তানসহ পরিবার নিয়ে এসেছেন রংপুরের আব্দুল হালিম। তিনি বললেন, সবুজ গ্রামের ভেতর গাঢ় সবুজ পাতা আর দীর্ঘ এবং চওড়া ডালপালা ছড়ানো বিশাল এই আম গাছ এক বিস্ময়। আগেও এখানে এসেছেন। পরিবারের সবাই জায়গাটি খুব পছন্দ করে।
গাছের নিচে চানাচুর বিক্রি করেন ২৫ বছর বয়সী খোশেদ আলম।
তিনি বলেন, প্রতিদিন তার চার-পাঁচশ’ টাকার চানাচুর বিক্রি হয়। গাছটির কথা বেশি প্রচার হলে আরো অনেক মানুষ আসবে এবং এতে এলাকারও উন্নতি হবে বলে মনে করেন তিনি।
বালিয়াডাঙ্গীর আশ্চর্য এই আম গাছ দেখতে দশ টাকা দিয়ে টিকিট করতে হয়। গাছের পাশে টিকিট কাউন্টারে বসেন কাজিম উদ্দিন। তিনি বললেন, প্রতিদিন অনেক টাকার টিকিট বিক্রি হয়।
গাছটিসহ এই নুরুল ইসলাম বলেন, আমের সময় প্রচুর আম হয়। পাশ থেকে এক শিশু বলে ওঠে, খুব মিষ্টি আম। ঠাকুরগাঁও শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার পশ্চিমে বালিয়াডাঙ্গীর সূর্যপুরী আম গাছ দেখতে যাওয়ার সময় পথে পড়ে রাধা দিঘি। বিশাল এই দিঘির শান্ত জলের দিকে তাকিয়েও পথিকের মন জুড়ায়।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)