মিয়ানমারের
সরকার ব্যবস্থায় একটি বিশেষ উপদেষ্টার পদ সৃষ্টি করে অং সান সু চি’র ক্ষমতা
জোরদারের পরিকল্পনা অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেছে দেশটির সামরিক এমপিরা।
ফলে দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিনের মাথায় সামরিক বাহিনীর সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়লো দেশটির সদ্য ক্ষমতাসীন বেসামরিক সরকার।
গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী সু’চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) মনোনীত প্রেসিডেন্ট থিন কিউ এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা গত বুধবার শপথ গ্রহণ করেন। এর আগে দেশটিতে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ছিল।
সাংবিধানিক বিধিনিষেধের জন্য অং সান সু চি প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। এ সত্ত্বেও তিনি দেশ শাসনের অঙ্গীকার করেছেন। এনএলডি সু চি’র জন্য ‘রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা’র মতো নতুন পদ সৃষ্টি করতে গতকাল বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে বিল তুলেছে। এ বিল পাস হলে তিনি পার্লামেন্টে চালকের ভূমিকায় থাকবেন।
সু চি ইতিমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ চারটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। আর সু চি’র জন্য উপদেষ্টার পদ সৃষ্টি করা নিয়ে তার দল ও সেনাবাহিনীর মধ্যে আগাম বিরোধের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার উচ্চকক্ষে এ নিয়ে এক বিতর্কে সামরিক বাহিনী থেকে মনোনীত এমপিরা একে অসাংবিধানিক বলেছেন। কর্নেল মাইন্ট স আশংকা প্রকাশ করেছেন, এই পদের ফলে প্রেসিডেন্ট ও উপদেষ্টার অবস্থান সমান হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘এটা সংবিধান বিরোধী। তাই আমি সংবিধান অনুযায়ী বিল সংশোধনের পরামর্শ দিচ্ছি।’
অন্য সেনা আইনপ্রণেতা কর্নেল হিয়া উইন অং বলেন, ‘এটা আইন, নির্বাহী ও বিচার বিভাগের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।’
সেনা আমলে প্রবর্তিত সংবিধানে পার্লামেন্টের মোট আসনের এক তৃতীয়াংশ সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষিত।
১৯৯০ সালের নির্বাচনেও জয়ী হয়েছিলেন অং সান সু চি। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি সামরিক জান্তা। এবারের নির্বাচনের আগে সরকার সাংবিধানিক এমন পরিবর্তন এনেছিলো যাতে সু চি প্রার্থী হতে না পারেন। তবে তার নেতৃত্বেই তার দলের নিরংকুশ জয়ে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে মিয়ানমার।
১৯৪৫ সালের ১৯ জুন মিয়ানমারের ইয়াংগুনে সু চির জন্ম। পরিবারের তৃতীয় এই সন্তানটি অহিংস গণতন্ত্রবাদী আন্দোলনকারী হিসেবেই বেশি পরিচিত সারা বিশ্বে।