মুক্তিযোদ্ধা ও কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী প্রয়াত লাকী আখান্দকে নিয় অনেকেই কথা বলছেন। কিন্তু তার বিপদের সময় ক’জন তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তার জীবন কেটেছে অনেক কষ্টে। অথচ কাউকে তিনি শেয়ার করেননি। পাননি এফএম রেডিও, টিভি চ্যানেল, মুঠোফোনে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, রিয়েলেটি শো থেকে তার গানের জন্য প্রাপ্য রয়্যালিটি। লাকী আখান্দ তার এই বেদনার কিছু কথা বলেছিলেন কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের কাছে। সেই সব কথা সম্প্রতি তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন আসিফ। পোস্টে তিনি লিখেছেন—
‘লাকী ভাইয়ের সাথে আমার চলাফেরা হঠাৎ জ্বলে উঠে আবার নিভে যাওয়া আগুনের ফুলকির মতো। হাতড়ে বেড়ানোর মতো স্বল্প কিছু স্মৃতি আর কিছু টিপস আমার অর্জন। ইন্ডাষ্ট্রির বড় মানুষদের কাছে আমার এ অর্জন একেবারেই নস্যি। উনি যদি পঞ্চাশ বছর কাজ করে থাকেন, তাহলে ওনার কাজের সংখ্যা এতো কম কেন? উত্তরে বলবেন বোদ্ধারা, ‘কোয়ান্টিটি নয় কোয়ালিটিই মূখ্য!’ শুধু নিজের বেলায় ছাড়া। লাকী ভাইকে জমি বিক্রি করতে হয়েছে, বিয়ে করে নিজেকে নির্বাসিত করেছেন ময়মনসিংহে। বাকি জীবনের নিরাপত্তার জন্য বাঁচতে চেয়েছিলেন জয়কালী মন্দিরের পাশে থাকা জমিতে।
তারকাদের মায়াকান্নায় ভেসে গেছে পত্রিকা, মিডিয়া। দুয়েকজন যারা সলিড ছিলেন লাকী ভাইয়ের সাথে, তারা ব্যাকফুটে । গান যা সৃষ্টি করেছেন সবই অমর, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাহলে লাকী ভাইয়ের অভাব ছিল কোথায়! আমাকে তিনি শেয়ার করেছেন নিজের গানের রেভিনিউ উদ্ধারের ব্যাপারে। এতদিন পর এই প্রশ্ন কেন লাকী আখন্দের মতো ক্ষণজন্মা কিংবদন্তির সামনে আসবে! কেন তিনি আমার মত চুনোপুটির সঙ্গে এসব শেয়ার করবেন! ক্ষত আমার শত শত, আরও নইলে কিছু যোগ হলো, লাকী ভাই বলে কথা ।
সরকারি রেডিও, টিভিতে রয়্যালিটি কেন বন্ধ? এফএম রেডিও, টিভি চ্যানেল, মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, রিয়েলিটি শোতে লাকী ভাইয়ের গানগুলোর রেভিনিউ কোথায়! কেন লাকী ভাইকে মৃত্যুর আগে আর্থিক সাহায্য চাইতে হবে! যারা কাঁদছেন, বক্তৃতা দিচ্ছেন তাদের কাছে প্রশ্ন– কতদিন কাঁদবেন লাকী ভাইয়ের জন্য! এতো বড় বড় শিল্পী, টিভি, মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, রেডিও, মিডিয়া সব মৃত্যুকে নিয়ে ব্যবসা করে। আপনাদের ব্যক্তিস্বার্থের লোভেই এই সিষ্টেম লস। যদি নিজের উপর কখনো পড়ে, তখনকার অসহায়ত্ব এখনি একবার চোখ বন্ধ করে ভাবুন। আমি কে! মফস্বল থেকে উঠে আসা অশিক্ষিত শিল্পী। তবে সেই শিক্ষা আমার আছে, যে শিক্ষা আমাকে বাঁচায়। সাধু সাবধান!’