জঙ্গি দমনে সফলতার পাশাপাশি অপহৃত হওয়ার ২৫ দিন পর পাঁচ বছর বয়সী সুমাইয়াকে পুলিশের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মা–বাবা কোলে ফিরে পাওয়ার খবরে দেশবাসী বাংলাদেশ পুলিশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এর মধ্যেই দু:সংবাদ। শনিবার রাজশাহীতে মহানগর পুলিশের অফিসার্স মেস থেকে সহকারী কমিশনার সাব্বির আহমেদ সরফরাজের গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। সকালে তিনি ঘুম থেকে না উঠলে পুলিশ সদস্যরা তাকে ডাকাডাকি করেন। ঘরের মধ্য থেকে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে তারা দেখতে পান সাব্বির তার রুমের জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছেন। পরে বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হলে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা। ঠিক একইভাবে গত মার্চে বগুড়ার গাবতলি থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল হাসানের মৃত্যুর খবরও আমরা পেয়েছি। গণমাধ্যমে প্রকাশ, তিনি মৃত্যুর আগে ‘সুসাইড নোট’ লিখে গিয়েছিলেন। এছাড়া চলতি মাসের দুই তারিখে ময়মনসিংহের গৌরিপুরে হালিমা বেগম নামের এক নারী পুলিশ সদস্য নিজের পুরুষ সহকর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে ব্যারাকে গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি নিজের ডায়রীতে এসব কথা লিখে গেছেন। পুলিশ বাহিনীর সামগ্রিক বিচারে ‘আত্মহত্যা’র বিষয়গুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে হলেও গত একমাসে পুলিশের একজন নারী সদস্য, ওসি এবং সহকারী কমিশনারের ‘আত্মহত্যা’র বিষয়টি নিশ্চয়ই আমাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একমাসে বেশ কয়েকটি ‘আত্মহত্যা’ পুলিশের পেশাগত কিংবা ব্যক্তিগত বিষয়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় তাদের মানসিক প্রশিক্ষণের দুর্বলতা ফুটে উঠছে বলে আমরা মনে করি। ধর্ষণের ঘটনায়ও আমরা খুবই উদ্বেগ বোধ করছি। এই বাহিনীতে কর্মরত নারী সদস্যদের ১০ ভাগের বেশি সদস্য পুরুষ সহকর্মীদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হন বলে গত বছরের শেষের দিকে কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ নামে একটি সংস্থার গবেষণায় বলা হয়েছে। এই বিষয়গুলো যাতে বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য তাদেরকে উন্নত নৈতিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি কেন কর্মক্ষেত্রে এসব ঘটনা ঘটছে তা নির্ণয়ে এখনই সংশ্লিষ্টদের মনোযোগী হওয়া উচিৎ বলে আমরা মনে করছি।