মঞ্চ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে সমানতালে ব্যস্ত আছেন ছোট পর্দা এবং বড় পর্দার কাজ নিয়ে, তিনি অভিনেতা মাজনুন মিজান। তার কাজের একটা বড় অংশ জুড়ে আছে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক এবং নির্মাণের কারিগর হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে। হুমায়ূন আহমেদের নাটক, সিনেমা যথেষ্ঠ জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে তাকে। সম্প্রতি তিনি এসেছিলেন চ্যানেল আই কার্যালয়ে। সেখানেই হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন-
কেমন আছেন?
ভালো আছি।
হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি এখনও কতটুকু নাড়া দেয় আপনাকে?
তার স্মৃতি তো সবসময় কোনো না কোনোভাবে আমাকে নাড়া দেয়। আমি সৌভাগ্যবানদের একজন যে হুমায়ূন আহমেদের স্নেহ, ভালোবাসা পেয়েছি এবং পছন্দের মানুষদের তালিকায় আসতে পেরেছি। আমার অভিনয়জীবনে এবং ব্যক্তিজীবনে এটা বড় পাওয়া।
কাজ এবং কাজের বাইরের হুমায়ূন আহমেদ আপনার কাছে কেমন ছিলেন?
দুটোই অসাধারণ। কাজের ফাঁকে আড্ডা এবং শুধু আড্ডা দুটোই জমাতেন বেশ করে। আর উনি তো খুব চমক দেখাতে পছন্দ করতেন। উনি খুব সাধারণ মানুষ ছিলেন, আবার একই সময়ে খুব অসাধারণ মানুষও ছিলেন। উনি শিখাতেন সবসময়। ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ ছবির সময় পুরো টিমকে পুরো সময় নুহাশ পল্লীতে থাকতে হয়েছে। সেখানে যখন যাদের শুটিং থাকতো না, তাদের জন্য তিনি ড্রইংরুমে একটা বড় টিভি রেখেছিলেন। আর তাদের জন্য বিশ্বের বিখ্যাত ৩০ টি ছবি সিলেক্ট করে দিয়েছিলেন। শুটিং না থাকলে তখন আমরা বসে বসে সেই ছবিগুলো দেখতাম।
উনার কাছাকাছি এলেন কিভাবে?
আমি উনার কাজের জন্য ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। কিন্তু অনেক দিন কোনো সাড়া পাইনি। পরে অভিনেতা চ্যালেঞ্জারের সহায়তায় উনার কাছাকাছি আসার সুযোগ পাই। উনি আমার সিস্পল উপস্থাপনা খুব পছন্দ করতেন।
কতগুলো কাজ করেছেন তার সঙ্গে?
সিনেমা দুটি- আমার আছে জল এবং নয় নম্বর বিপদ সংকেত। আর ধারাবাহিক, প্যাকেজ মিলিয়ে মোট ৫০ টির মতো কাজ করেছি তার সঙ্গে। এর বেশিও হতে পারে।
কোন কাজটি বেশি পছন্দ?
‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ ছবিতে আমার কাজটি আমার পছন্দের। এছাড়া হুমায়ূন আহমেদের ‘বনকুমারী’ নাটকের ক্যারেক্টার আমার বেশ পছন্দের।
বিশেষ কোনো স্মৃতি?
ঈদের সময়ে আমাদের কাজের চাপ বেশি থাকায় পুরো সময়টা নুহাশ পল্লীতে থাকতে হতো। তাই রোযার দিনে হুমায়ূন আহমেদ সবাইকে নিয়ে একত্রে বসে ইফতার করতেন। আজও রমজান মাস এলে সেই দিনগুলোকে মিস করি।
শেষ দেখা কবে?
ক্যানসারের প্রথম কেমো দেবার পর উনি আমেরিকা থেকে যখন দেশে ফিরেন সেবার শেষ দেখা হয়েছি। আর উনি মারা যাবার পর আমি উনার লাশ দেখি নাই। আমার পক্ষে এটা সহ্য করা কঠিন ছিল তাই।
ধন্যবাদ চ্যানেল আই অনলাইনকে সময় দেবার জন্য
আপনাকেও ধন্যবাদ।
ছবি: জাকির সবুজ