গত কয়েকদিন ধরেই বিএনপি নেতারা দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান কয়েকটি মামলায় তাকে আটক করার আশংকা প্রকাশ করছেন। একইসঙ্গে সভা-সমাবেশে দলটির মহাসচিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হলে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না, দেশে কোন নির্বাচনও হতে দেওয়া হবে না। তাদের অভিযোগ, সরকারের ইচ্ছাতেই খালেদা জিয়াকে আটকের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই বলা হচ্ছে, বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে আদালতের বিষয়। বিএনপি নেত্রীকে কারাগারে পাঠানোর কোন পরিকল্পনা সরকারের নেই। সর্বশেষ জার্মানির মিউনিখে প্রবাসী বাংলাদেশীদের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আদালতে প্রমাণ হলে খালেদা জিয়ার শাস্তি হবে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেছেন, তার শাস্তি হলে দেশে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না, এটা কেমন আবদার? আমরা মনে করি, রাজনৈতিকভাবে কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিষয়টির মীমাংসা স্বাধীনভাবে আদালতেরই করা উচিৎ। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার কিংবা বিএনপি’র কোন পক্ষ থেকেই কোন ধরণের চাপ অথবা হুমকির কাছে নতি স্বীকার না করে সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। কেউ যদি অপরাধ না করে থাকেন, তাহলে শুধু খালেদা জিয়া নয়, কোন ব্যক্তিকেই শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি আমরা সমর্থন করি না। একইসঙ্গে কেউ অপরাধ করে থাকলে তাকে যদি আদালত শাস্তি দেন, তবে দেশে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে হুমকিও সমর্থনযোগ্য নয়। তাছাড়া বিচারিক আদালতের রায় খালেদা জিয়ার বিপক্ষে গেলেই তিনি নির্বাচনে লড়াই করার অযোগ্য হয়ে পড়বেন না। কারণ, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলসহ আরো কয়েকটি প্রক্রিয়া রয়েছে। ১/১১’র সময়কালে দণ্ডিত হয়েছেন এমন অনেক রাজনীতিবিদই পরবর্তীতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন। তারা কেউ নির্বাচন বয়কট কিংবা নির্বাচন বানচালের হুমকি দেননি। যেকোন অজুহাতে নির্বাচন বয়কট কিংবা বানচালের হুমকি কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে শোভা পায় না। এটা কোন রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে না। তাই কোনো পক্ষেরই আদালতকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা না চালিয়ে আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দেওয়া উচিৎ বলেই আমরা মনে করি।