ভারতের চণ্ডিগড়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়া ১০ বছর বয়সী শিশুকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে। ওই শিশুকে গর্ভপাত করানোর অনুমতি দেয়া হয়নি।
চণ্ডিগড়ের ‘লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি’র মহাবীর সিং বিবিসি’কে বলেন, ‘আমরা ১৪ থেকে ১৫ বছর বয়সী কিশোরী গর্ভবতী হওয়ার বহু ঘটনা দেখেছি। কিন্তু এই প্রথম আমরা ১০ বছর বয়সী মেয়ের এমন ঘটনা পেলাম।’
শিশুটিকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত তার আত্মীয় বর্তমানে কারাগারে বিচার শুরুর অপেক্ষায় আছে।
সদা হাস্যোজ্জ্বল কিন্তু একটু লাজুক আর কম কথা বলা ছোট্ট মেয়েটি মুরগি, মাছ আর আইসক্রিম খেতে খুব ভালোবাসত। আর ভালোবাসত ‘ছোটি আনন্দি’ আর ‘শিনচ্যান’ কার্টুন দেখতে।
কিন্তু ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকে তার দিন কাটছে দুঃস্বপ্নের মাঝে। ওই ঘটনায় গর্ভবতী হয়ে পড়লে তার পরিবার গর্ভপাতের অনুমতির জন্য আদালতের কাছে পিটিশন দায়ের করে।
তবে গত ২৮ জুলাই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ওই পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মেয়েটি ৩২ সপ্তাহের অন্তসত্ত্বা হওয়ায় গর্ভপাতের সময় ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে। চিকিৎসকদের একটি প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতকে জানান, বর্তমান অবস্থায় গর্ভপাত ঘটানো মেয়েটির জন্যই ‘খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ’ হয়ে যাবে। মেয়েটির গর্ভে থাকা ভ্রুণও সুস্থ আছে বলে জানান তারা।
এই পরামর্শের প্রেক্ষিতে নেয়া আদালতের সিদ্ধান্তে চরম হতাশ মেয়েটির পরিবার। কারণ তাদের বক্তব্য, মেয়েটি নিজেই এখনো শিশু, যে কিনা বুঝতেও পারছে না আসলে কী ঘটছে।
ভারতীয় আইনে মায়ের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহ পর আর গর্ভপাতের অনুমতি দেয়া হয় না, যদি না ডাক্তার জানায় গর্ভপাত না করালে মায়ের জীবন ঝুঁকিতে থাকবে।
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশি সময় পেরোবার পর গর্ভপাতের আবেদন বেশি জমা পড়ছে। এর অনেকগুলোই শিশু ধর্ষণের ফলে গর্ভধারণের ঘটনা, কেননা ভিক্টিম শিশু জন্মদান ও লালনপালনের উপযুক্ত নয়।