সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে শাহাদাত হোসেনের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান জহুরুল ইসলাম অমি। মাত্র ৪ রান যোগ করতে পারলেই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মৌসুমের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেতেন আবাহনীর এ ওপেনার। দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে আউট হন ৯৬ রানে। সেঞ্চুরি মিস করেও অবশ্য পরে বোলারের প্রশংসাই ঝরল জহুরুলের কণ্ঠে।
এবারের লিগে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সুযোগ হারালেও জহুরুলের দল মোহামেডানের বিপক্ষে সহজেই জিতেছে, ৬ উইকেটের ব্যবধানে। দলের সাফল্যে সেঞ্চুরির আক্ষেপ উবে গেছে তার! শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে তুলে বললেন, ‘আবাহনী জিতেছে, এজন্য অনেক খুশি। সেঞ্চুরি মিস হয়েছে, বলটা আসলে অনেক ভালো করে ফেলেছে শাহাদাত, সেকেন্ড স্পেলে এসে।’
‘এই উইকেটে আড়াইশ রান তাড়া করে জয় পাওয়া সহজ ছিল না। কারণ বল উঁচু-নিচু হচ্ছিল। আমাদের বোলাররা ভালো বল করেছে। আড়াইশ’র মধ্যে আটকে রাখতে পেরেছে। শুরুতে সৌম্য ও আমার পার্টনারশিপ, তারপর ওয়াসিম জাফর, শান্তর ব্যাটিং কাজে দিয়েছে। আমরা ব্যাক টু ব্যাক উইকেট হারাইনি। ছোট ছোট জুটিতেই ম্যাচটা সহজ হয়েছে আমাদের জন্য।’
ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের ঐতিহ্যবাহী দুই দলের লড়াই আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ, অথচ সোমবার মিরপুরে দেখা যায়নি দর্শক উপস্থিতি। ফাঁকা গ্যালারি দেখে অবাক হয়েছেন জহুরুল। অন্ততপক্ষে ঘরোয়া লিগের বিগ ম্যাচ দেখতে দর্শকদের মাঠে আসার অনুরোধ এ ক্রিকেটারের।
‘আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে এর আগেও খেলেছি। আবাহনীতে ৩ বছর খেলেছি অনেক আগে। তখন এর থেকে আরও বেশি দর্শক থাকত। এমনকি সমর্থক গোষ্ঠীরও প্রায় ৫০-৬০ জন থাকত আবাহনীর। দিন দিন তা কমে আসছে। আসলে দর্শক যতবেশি থাকবে খেলতে তত ভালো লাগবে। তারপরও আজ কিছু সমর্থক ছিল আবাহনীর। তারা বেশকিছু সময় চিৎকার করেছে। খুব ভালো লাগছিল ভেতর থেকে। আমি চাইব আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ বা যে বড় ম্যাচ হবে আমাদের, দর্শক আরও বেশি আসুক।’
সোমবার ২৪৯ রানের লক্ষ্য আকাশী-নীলরা টপকে যায় ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫ বল হাতে রেখে। ওপেনিং জুটিতে সৌম্য সরকারকে নিয়ে জহুরুল যোগ করেন ১০৫ রান। ওই ভিত্তিই আবাহনীকে নিয়ে যায় জয়ের দিকে। ৫৪ বলে ৪৩ করে সৌম্য সাজঘরে ফেরেন শাহাদাতের বলেই, বোল্ড হয়ে। এ বাঁহাতি ওপেনার মারেন ৫টি চার ও একটি ছক্কা।
তিনে নামা আবাহনীর ভারতীয় রিক্রুট ওয়াসিম জাফর ৩৮ করে আউট হন শফিউল ইসলামের দারুণ এক ডেলিভারিতে, উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে। নাজমুল হোসেন শান্ত টিকে থাকতে পারেননি বেশিক্ষণ। শ্রীলঙ্কান বাঁহাতি স্পিনার চাতুরাঙা ডি সিলভার বলে হন এলবিডব্লিউ। এ বাঁহাতির ১৬ বলে ১৬ রানের ইনিংসে ছিল তিনটি বাউন্ডারি।
আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১৫ ও সাব্বির রহমান ২১ রানে অপরাজিত থেকে ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। আব্দুল মজিদের করা ইনিংসের ৪৮তম ওভারের তৃতীয় বলে লংঅন দিয়ে বিশাল এক ছক্কা মেরে খেলার শেষ টানেন সাব্বির।