পাঁচ বছর আগেও ব্যবধানটা ছিল লিওনেল মেসি-৪, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো-১! আর্জেন্টাইন অধিনায়কের চিরপ্রতিপক্ষ ভাবা হলেও পর্তুগিজ অধিনায়ক তখন কেবলই পিছিয়ে পড়ছিলেন ব্যক্তিগত অর্জনের দৌড়ে।
২০১৩ সালের পর থেকে সিআর সেভেনের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। বাকি চার বছরে কেবল একবারই মেসিকে ছাড় দিয়েছেন রোনালদো। বৃহস্পতিবার আরও একবার ব্যালন ডি’অর হাতে তুললেন। তাতে মেসির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত অর্জনের পাল্লাটা এখন সমানে সমান।
২০১০ সালে ফিফা ব্যালন ডি’অর একীভূত হওয়ার আগে একবার করে জিতেছিলেন দুজনে। রোনালদো ২০০৮, মেসি ২০০৯ সালে। ২০১০ থেকে ২০১২ পর্যন্ত টানা তিনবার ফিফা ব্যালন ডি’অর ট্রফি নিজের দখলে রেখেছিলেন মেসি। পরের দুই বছর রোনালদো। ২০১৫ সালে শেষবারের মত ফিফা ব্যালন ডি’অর গেছে মেসির ঘরে।
২০১৬ সালে ফিফা ও ব্যালন ডি’অর আলাদা হওয়ার পর টানা দুবছর ফিফা ও ইউরোপ বর্ষসেরা হলেন রোনালদো। পাঁচটি করে ফিফা বর্ষসেরা ও ইউরোপ সেরার ট্রফি আছে তার ঘরে। মেসিরও তাই।
কেবলমাত্র ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলসংগ্রাহকের ট্রফি গোল্ডেন সু’র হিসাবে পিছিয়ে ছিলেন মেসি। গত মাসে সেটাতেও সমতা এনেছেন বার্সেলোনা মহাতারকা। রিয়াল মাদ্রিদ প্রতিপক্ষের সঙ্গে মিলে তার সোনার জুতার সংখ্যাটাও এখন সমান চার!
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার ক্ষেত্রেও বেশ আশ্চর্যজনকভাবে সমতা দুজনের মধ্যে! ক্লাবের হয়ে দুজনেই জিতেছেন চারটি করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি। ২০০৮ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সি গায়ে ইউরোপ সেরার পর রিয়ালের হয়ে ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতেন সিআর সেভেন। বার্সার জার্সি গায়ে মেসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন ২০০৬, ২০০৯, ২০১১ ও ২০১৫ সালে।
অবশ্য একটা জায়গায় দুজন দুজনের থেকে এগিয়ে আছেন বেশ। রোনালদো দেশের হয়ে ইউরো কাপের মত বড় শিরোপা জিতলেও মেসির অবস্থা বেশ দৈন্য! ২০১৪ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল থেকে রানার্সআপ হয়ে ফেরার পর ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কোপা আমেরিকাতেও ব্যর্থ মেসি। মেসি আবার দেশের হয়ে অলিম্পিক সোনা জিতেছেন, রোনালদোর যেটা জয়ের সম্ভাবনা একেবারে নেই বললেই চলে।
তবে একটা বিষয় সম্পূর্ণ পরিষ্কার। ২০০৮ সাল থেকে ইউরোপ ও ফিফার সেরা পুরষ্কারগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন ফুটবলের বর্তমান দুই মহাতারকা। ২০১৭ সাল দুজনের মধ্যে এনে দিয়েছে সমতা। তাই ২০১৮ সালটা হতে চলেছে রোনালদো-মেসির জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ এক বছর। দুজনের একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার বছর। সেটাই হবে নাকি নেইমার বা তৃতীয় আরেকজন ভাগ বসাবেন দুই মহাতারকার রাজত্বে, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।