নেত্রকোণায় সপ্তম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রীকে উত্তক্ত করার বিচার চাইতে গিয়ে গ্রাম্য সালিশে শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন ছাত্রীর বাবা। সালিশে মেয়ের বাবাকে বেতের আঘাতসহ গলায় জুতার মালা পরিয়ে ঘোরায় গ্রামের মাতব্বররা। সেই সাথে মাথার ন্যাড়া করার নিদের্শ দিলে বিষয়টি না মানায় পিটিয়ে গুরুতর আহত করে মেয়ের বাবাকে।
স্থানীয়সুত্রে জানা গেছে, নেত্রকোণা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়া ছাত্রী সদর উপজেলার বণি গ্রাম থেকে বিদ্যালয়ে আসতেন। আসা-যাওয়ার পথে রোজ উত্ত্যক্ত করতো একই গ্রামের বখাটে রতনসহ কয়েকজন। এক সপ্তাহে আগে রাস্তায় তার গতি রোধ করে নির্যাতন করতে চাইলে পাশের পুকুরে ঝাপ দেয় স্কুলছাত্রী। সাথে সাথে রতনের বন্ধুসহ পুকুরে নেমে তাকে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করে। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে মেয়েটিকে রক্ষা করে।
এ বিষয়টি স্কুলছাত্রীর সহপাঠিরা গ্রামে এসে জানতে চাইলে গ্রাম্য মাতব্বররা ক্ষেপে গিয়ে উল্টো নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবার বিরুদ্ধে সালিশ বসিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে। নির্যাতিতা ছাত্রী বলেন, আমাকে রতনসহ অন্যরা বাড়ীর আসেপাশে এসে ভয় দেখাতা। আমার বাবা বিচার চাইলে তাকে গ্রামের মাতব্বররা পিটিয়ে আহত করে। বাবা এখন হাসপাতালে ভর্তি, এখনো জ্ঞান ফেরেনি।
সালিশে দেয়া রায়ের কথা স্বীকারও করেছেন গ্রাম্য সালিশের মাতাব্বর। গ্রাম্য সালিশের মাতাব্বর মোফাজ্জল হোসেন বলেন, স্কুলে যাওয়ার সময় রতনের হাতে নির্যাতনের শিকার হয় মেয়েটি। আমরা চেয়েছিলাম সমঝোতার মাধ্যমে এ সমস্যার হোক আর কেউ যেনো পথে কোনো মেয়েকে ইভ টিজিং করতে না পারে। কিন্ত ছেলে পক্ষরা পরিকল্পিতভাবে এখানে মারামারি করেছে। মেয়েটির বাবা আর মামাকে মেরেছে। এক পর্যায়ে মেয়েটির বাবা অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে।
পুলিশ জানায়, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি জানতে পারলাম একটা ইভ টিজিংয়ের ঘটনা ঘটেছে সেই প্রেক্ষিতে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আর অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত রতন ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা।