১৯টি জাতীয়, দুটি অলিম্পিক-সব মিলিয়ে মোট ৫৫টি দলকে কোচিং করিয়েছিলেন রুডি রুটেনডর্ফ! নিরন্তর কাজই করতেন। ফুটবল কোচিং করানো ছিল তার নেশা-পেশা, জীবন,সব। থামতে জানতেন না বলেই ফুটবল বিশ্বের তার নামই হয়ে গিয়েছিল ক্লান্তিহীন রুডি! কিন্তু প্রকৃতির অমোঘ নিয়মের সঙ্গে তো আর পেরে উঠা সম্ভব নয়, তাই মৃত্যুর কাছে অবশেষে হার মানলেন ৯৩ বছর বয়সী জার্মান কোচ।
যেখানে জন্মেছিলেন, রাইন নদীর পারে সেই কবলেঞ্জ শহরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রুডি। শনিবার নিজের পিতার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন পুত্র ফাবিয়ান।
১৯৫০ সালে সুইস দল ব্লু স্টার্সের দায়িত্ব নিয়ে পথচলা শুরু রুডির। এরপর থেকে আর যেন পেছনে ফেরার সময়ই পাননি। টানা ৫৮ বছর ধরে চালিয়ে গেছেন ফুটবলারদের ‘দ্রোণাচার্যের’ পদ। কোচিং করিয়েছেন চিলি, অস্ট্রেলিয়া, চায়না, আফ্রিকা মহাদেশের একাধিক দলকে।
তার হাত ধরে সবচেয়ে বেশি বিকাশ ঘটেছিল অস্ট্রেলিয়ার । ১৯৭৮ বিশ্বকাপে উঠতে ব্যর্থ সকারুদের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। পরে তার হাত ধরে অস্ট্রেলিয়া কেবল পরের বিশ্বকাপে সুযোগই পায়নি, উঠে যায় র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দলেও (আট)।
রুডি শিষ্যদের কেবল ফুটবল শেখাতেন না, শিক্ষা দিতেন মানবিকতা সম্পর্কেও। ১৯৯৯ সালে দায়িত্ব নেন রুয়ান্ডার। আফ্রিকান দেশটিতে তখন পর্যন্ত গৃহ যুদ্ধের তাজা ক্ষত। এক গোত্রের সঙ্গে আরেক গোত্রের খুনোখুনি সম্পর্ক। তেমনই দুই গোত্রকে ফুটবলের মাধ্যমে সম্পর্কের বাঁধনে জড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রবীণ এই জার্মান। ২০১৩ সালে বিবিসিকে নিজেই সেই কাহিনী বলেছেন তিনি।
ফুটবলকে ভালোবেসে কখনোই ঝুঁকি নিতে পিছুপা হননি রুডি। সেজন্য ফিফা তাকে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছে একাধিক বিপদসংকুল আফ্রিকান দেশে। ২০০৩ সালে সবশেষ কোচিং করান সামওয়া জাতীয় দলকে। নিজের ফুটবল নিয়ে তার দর্শন ছিল অনেকটা এরকম, ‘যদি আমি একটা বালতিতেও লাথি মারি তাতেই মনঃপ্রাণ ঢেলে দেই। আর এই কারণেই আমি ঝুঁকি নিতে বড্ড ভালোবাসি।’