সেমিতে যেতে হলে দরকার ৩-০ গোল। এমন কঠিন সমীকরণকেই হাতের মোয়া বানিয়ে ফেলেছে রোমা। বার্সেলোনার মত কঠিন প্রতিপক্ষের জালে ঠিক তিন গোল জড়িয়ে ইউরোপিয়ান ফুটবলে আরেকটি রূপকথা লিখেছে ইউসেবিও ডি ফ্রান্সেস্কোর দল।
এই জয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৪ গোলের সমতা থাকলেও প্রতিপক্ষের মাঠে অ্যাওয়ে গোল থাকায় বার্সা সমর্থকদের কাঁদিয়ে সেমির টিকিট কেটেছে রোমা। প্রথম লেগে বার্সা মাঠে ৪-১ গোলে হেরে এসেছিল দলটি।
কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ বা তার চেয়ে বেশি গোলে পিছিয়ে থেকেও সেমিতে যাওয়ার সর্বশেষ নজিরটি ছিল দেপার্টিভো লা করুণার। আর ঘরের মাঠে বার্সার কাছে কখনোই হার দেখেনি রোমা। ২০০২ সালে নিজেদের মাঠে স্প্যানিশ দলটিকে ৩-০ গোলেই হারানোর সুখস্মৃতি ছিল ইতালিয়ান জায়ান্টদের।
মঙ্গলবার ঘরের মাঠে ম্যাচ শুরুর ৬ মিনিটের মাথায় গোল পায় রোমা। প্রায় মাঝমাঠ থেকে ড্যানিয়েল ডি রস্সির বাড়িয়ে দেয়া বলে বার্সার দুই রক্ষণসেনাকে বোকা বানিয়ে জালে বল জড়ান এডেন জেকো।
গোল করার পর ব্যবধান বাড়ানোর নেশায় বার্সা রক্ষণের উপর আরও শক্তভাবে চেপে বসে রোমার আক্রমণভাগ। ২৯ মিনিটে ফ্রেডরিকো ফাজিওর মাথা ছোঁয়া বল বার ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। ৩৭ মিনিটে জেকোর আরেকটি দারুণ হেড ঝাঁপিয়ে ফিরিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক টের স্টেগেন।
মেসি-সুয়ারেজদেরও প্রথমার্ধে ভালমতোই বোতলবন্ধী করে রেখেছেন রোমা ডিফেন্ডাররা। কেবল দুই ফ্রি-কিক বারের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারা ছাড়া মেসি বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন অহেতুক দৌড়াদৌড়ি করে।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৭ মিনিটে রোমার দ্বিতীয় গোলটি এসেছে পেনাল্টি থেকে। নিজেদের ডি-বক্সে এডেন জেকোকে ফেলে দিয়ে স্বাগতিকদের পেনাল্টি উপহার দেন পিকে। সেখান থেকে স্পটকিকে ব্যবধান ৪-৩এ কমিয়ে আনেন ডি রস্সি।
তখন আর এক গোল হলেই অ্যাওয়ে গোলের সুবিধায় কাটা হয়ে যাবে সেমির টিকিট, এমন সমীকরণে বার্সা রক্ষণে হামলে পড়ে রোমার আক্রমণভাগ। ৭৯ মিনিটে লরেঞ্জো ফ্লোরেঞ্জির ফ্লিক ঝাঁপিয়ে ফিরিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক।
শেষপর্যন্ত অবশ্য রক্ষা হয়নি। ৮২ মিনিটে দারুণ এক হেডে গোল করে শাপমোচন করেন প্রথম লেগে আত্মঘাতী গোল করা কনস্টান্টিনোস মোনালেস। তাতেই নিশ্চিত হয়ে যায় বার্সার বিদায়।
বার্সা অবশ্য শেষ চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু রোমার জমাট রক্ষণে খাবি খেয়ে টানা তৃতীয় মৌসুমে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিলো স্প্যানিশ জায়ান্টরা।