পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রেসিডেন্ট শাহরিয়ার খান এর একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)’র ওয়েবসাইটে। বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান ক্রিকেট বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে তার অভিমত জানিয়েছেন। চ্যানেল আই অনলাইনের পাঠকদের উদ্দেশে তা তুলে ধরা হলো:
পাকিস্তানের মাটিতে ক্রিকেটকে ফিরিয়ে নিতে পিসিবির পরিকল্পনা…
শাহরিয়ার খান: বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) অনেকটাই বন্ধুবৎসল। এই মাসে তারা তাদের নারী দল পাকিস্তানে পাঠাচ্ছে। আমি তাদের অনুর্ধ্ব ১৯, ‘এ’ দলকে আনতে চেয়েছিলাম। আমি আশা করি তারা তাদেরকে পাঠাবে। আমি চাই খেলাটি হোক। এটা বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে হতে পারে। শ্রীলঙ্কার সাথে ত্রিদেশীয়ও হতে পারি এটি। জাতীয় পর্যায়ে জিম্বাবুয়ে আগামী মাসে আসছে।
শ্রীলঙ্কা দলের উপর জঙ্গি হামলার পর গত ৬ বছরে এটাই প্রথম কোন টেস্ট খেলুড়ে দেশের পাকিস্তান সফর। জিম্বাবুয়ের সফরটি আমাদের জন্য সফল হবে বলেই আমি আশা করি। জিম্বাবুয়ের এই সফরের পর বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কাসহ অন্যান্য দেশও আমাদের দেশে আসবে। বাংলাদেশও আমাদের দেশে পরবর্তীতে আসবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।
২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ ১০ দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি পাকিস্তানের অবস্থানের পতন নিয়ে….
শাহরিয়ার খান: তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরবর্তী বিশ্বকাপে মাত্র ১০টি দল অংশ নেবে। আমি জানি বাংলাদেশসহ অন্যান্য কিছু দেশ এর বিরুদ্ধে রয়েছে। যদি পূর্বে ১৪টি দলের হয়ে থাকে তবে এখন কেন ১৪টি দল নয়? আমরা অন্যান্য দলের সাথে অবশ্যই আলোচনা করবো বিশেষ করে এশিয়ার দলগুলো যেমন শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের সাথে। আমরা এ বিষয়ে কি করবো তা ঠিক করবো। আমরা ১০ দলের চেয়ে ১৪ দলের বিশ্বকাপেই ইচ্ছুক বলে আমি মনে করি।
কিন্তু আমাদের এটাও বুঝতে হবে যে, আইসিসি এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। এই বিষয়টা পরিবর্তন করা কষ্টসাধ্য। যাই হোক পরবর্তী মাসে আমাদের মিটিংগুলোতে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। এতে করে ইতিবাচক কিছু বের হয়ে আসতে পারে।
১০ দলে বিশ্বকাপ বিষয়ে আইসিসির সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পিসিবির আকাঙ্খা..
শাহরিয়ার খান: এটা পরিবর্তিত হলে আমি খুশি হবো। আমি তাদের দলবর্তী নই যারা পরিবর্তন চায় কারণ র্র্যাঙ্কিংয়ে আমাদের পতন এবং তোমাদের জায়গা পাওয়ার কারণে। আমরা চেষ্টা করবো এবং সেই স্থান পুনরায় দখল করে নেবো। কারণ পরবর্তী কয়েক মাসে আমরা জিম্বাবুয়ে, ইংল্যান্ড এর বিপক্ষেসহ আরো বেশ কিছু সিরিজ খেলবো। বাংলাদেশও খেলবে। তবে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দলগুলো খুবই শক্তিশালী। ভারত, সাউথ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া। তাই বাংলাদেশের জন্য কাজটা অনেক কঠিন হয়ে যাবে।
কিন্ত বাংলাদেশ পারবে, কারণ তাদের মানের বিস্ময়কর উন্নতি হয়েছে।
বাংলাদেশ ২০১২ সালে পকিস্তান সফর বাতিল করার পর বিসিবি ও পিসিবি এর মধ্যে যে দুরুত্ব তৈরি হয়েছিলো, বিসিবি’র আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদানের মাধ্যমে এর মীমাংসা কি হয়েছে..
শাহরিয়ার খান: আমাদের একটা সমস্যা ছিলো। নিরাপত্তা এবং অন্যান্য কিছু কারণে ২০১২ সালে বাংলাদেশের আসার কথা থাকলেও তারা আসেনি। তখন থেকেই একটা দূরত্ব ছিলো। কিন্তু আমরা নিয়মিতই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হোক তা চাই। তাই আমরা এখানে এসেছি। আমরা বাংলাদেশ পাকিস্তানের মধ্যে ক্রিকেটকে চলমান রাখতে চাই। আমি মনে করি দূরত্বটা কেটে গেছে। আমি জানি বিনিময়ে পরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলও আমাদের দেশে আসবে, এক বছর পর, দুই বছর পর, যাই হোক। ইতিমধ্যে তারা তাদের নারী ক্রিকেট দলকে পাঠাচ্ছে।
বর্তমান সিরিজে খারাপ ফলের জন্য পিসিবি কোন ব্যক্তিকে বরখাস্ত বা শাস্তি দিবে কিনা..
শাহরিয়ার খান: আমি আগেও বলেছি কাউকে বরখাস্ত করা হবে না। আমি এখানে থাকতে এ ধরণে কোন শাস্তি কার্যকর করা হবে না। অনেকেই ধারণা করছে যে আমি এখানে এসেছি নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে বরখাস্ত করতে, যেটা সত্যি নয়। আমরা স্থির থাকতে চাই। আমরা হেরেছি, খুব খারাপ ভাবে হেরেছি, খুব ভালো একটি দলের বিপক্ষে। তারা ভারত, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভালো করছে। তারা খুব ভালো করছে। তাদের মধ্যে অনেক উদ্যম রয়েছে, যা তারা প্রথম টেস্ট ম্যাচে দেখিয়েছে। প্রায় ৩০০ রানে পিছিয়ে থেকে তাদের মতো করে কেই বা ফিরে আসতে পারে! এটা ছিলো অসাধারণ। আমার মনে হয় না ক্রিকেট ইতিহাসে আমরা শেষ ইনিংসে এভাবে ফিরে আসা দেখেছি।
আমাদের দলের সমস্যা অনেক গভীর যা আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে। আমাদের দলের ফিটনেস বাংলাদেশ দলের তুলনায় অনেক খারাপ। এক্ষেত্রে আমরা আন্তর্জাতিকভাবে নিম্নতম পর্যায়ে রয়েছি। এই সমস্যা দূর করতে আমাদের কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।