মানবসৃষ্ট কারণে ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন বন্যপ্রাণীহীন বনে পরিণত হলে বাংলাদেশে এক ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু।
রোববার সুন্দরবন অধ্যুষিত সাতক্ষীরা জেলার মুন্সীগঞ্জে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক কর্মশালায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। এসআরসিডব্লিউপি প্রকল্পের সহযোগিতায় সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কর্মশালায় বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পরিবেশ গবেষক, উন্নয়নকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা যোগ দেন।
দেশে প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে প্রথম ধারাবাহিক প্রামাণ্য টেলিভিশন অনুষ্ঠান শুরু করে প্রকৃতি রক্ষার দাবি জোরালো করে তোলা এই প্রকৃতিপ্রেমী বলেন, ‘বন্যপ্রাণীর বিরুদ্ধে সারাদেশেই যে আগ্রাসন চলছে, বিশেষ করে সুন্দরবনে; তা এখানকার প্রকৃতিতে ভয়াবহ বিপর্যয়ের হাতছানি দিচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে যে পরিবেশগত সংকট দেখা দেবে তা এই ভূখণ্ডের বাসযোগ্যতাকেই চ্যালেঞ্জ করবে।’
বন্যপ্রাণী আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সচেতনতাই সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী রক্ষা পাবে মন্তব্য করে মুকিত মজুমদার বলেন, ‘সুন্দরবন ও এর সাহচর্যে বাস করা বিপুল প্রাণীবৈচিত্র্য রক্ষায় আমাদের সচেতন মনোভাবের অভাব প্রকট। বন্যপ্রাণীর জন্য আমাদের মমতা আরো বাড়াতে হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহবান জানিয়ে এই প্রকৃতিপ্রেমী বলেন, ‘আমি আশা করবো যেখানেই বন্যপ্রাণীর ওপর আক্রমণ হবে; তরুণরা সেখানে প্রতিহত করবে। সবাইকে সচেতন করবে। সবার কাছে তারা এই বার্তাটি পৌঁছে দেবে, যে সুন্দর প্রকৃতিতে আমরা বেঁচে আছি-তাতে বন্যপ্রাণীরও অবদান রাখছে, সুস্থ-স্বাভাবিক বেঁচে থাকার অধিকার আছে তাদেরও।’
কর্মশালায় সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকতা জহির উদ্দিন আহমেদ, বন সংরক্ষক কেরামত আলী মল্লিক এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের গবেষক শামীম আহমেদ বক্তব্য দেন।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে ১৪ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত সুন্দরবন পশ্চিম বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের চারপাশের বিভিন্ন গ্রামবাসী ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে চলবে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা তৈরির কার্যক্রম।