প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র গ্রহণের মাধ্যমে সরকার দেশের মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন: সুস্থ বিচারপতিকে অসুস্থ বানিয়ে প্রথমে জোরপূর্বক বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর পদত্যাগ করানো হলো। এরপর প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন। পৃথিবীর কোনো দেশে এমন নজির নেই। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় যোগ দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন: ক্ষমতা অবৈধ হওয়ার ভয়েই সরকার প্রধান বিচারপতিকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করেছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রধান বিচারপতি সিঙ্গাপুরে আসেন। সেখানে সরকারের প্রতিনিধি গিয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সাক্ষর করে নিয়ে আসে। আর আজ রাষ্ট্রপতি সেই পদত্যাগপত্রে সাক্ষর করলেন। এর মধ্যদিয়ে বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে গেলো!
তিনি বলেন: এর আগে ‘অবৈধ পার্লামেন্ট’ ধ্বংস করেছে সরকার। আর নির্বাহী বিভাগকে আগেই ধ্বংস করা হয়েছে। এভাবে রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভই ধ্বংস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দেশ আজ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এই ক্রান্তিকাল থেকে বেরিয়ে আসতে চায় দেশের মানুষ।
আওয়ামী লীগের সময় শেষ হয়ে আসছে মন্তব্য করে তিনি বলেন: ১২ নভেম্বর সমাবেশে জনগণের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের দিন শেষ। তাদেরকে দেশের জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন: শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। সহায়ক সরকারের রূপরেখা সময় মতো উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন: আওয়ামী লীগের অপশাসনেই ৭ই নভেম্বরের সৃষ্টি। জিয়াউর রহমান যদি সেদিন ঘোষণা দিতেন, আরো ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতো।
‘গুম, খুন ও অপহরণ যদি বন্ধ করতে হয়, তাহলে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। ২০১৪ সালের মতো আর কোন নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না। নির্বাচন হবে ১৯৯১, ৯৬, ২০০১ এর মতো। চাইলে ২০০৮ এর মতো করবো। তবুও আওয়ামী লীগের অধীনে হবে না’, বলেন শামসুজ্জামান দুদু।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন: শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে আমরা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষায় বলতে চাই, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। কারণ এ পার্লামেন্ট নির্বাচিত নয়, অবৈধ।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।