উত্তরপূর্ব ভারতের তিন গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে পতন হচ্ছে টানা ২৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা বামপন্থি দল কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সবাদী) – সিপিএমের। এরফলে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতো ত্রিপুরায়ও বামপন্থিরা ক্ষমতার বাইরে চলে গেল।
ত্রিপুরায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়ের পথে কেন্দ্রীয় ক্ষমতাসীন বিজেপি। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে জয় ঘোষণার অপেক্ষা। অন্যদিকে কংগ্রেস সেখানে একটিও আসন পায়নি।
সকাল পর্যন্ত ত্রিপুরায় চলছিল বিজেপি-সিপিএম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। স্থানীয় সময় সকাল ১০ টায় দেখা যায়, বিজেপি ও বামদলের প্রত্যেকের কাছে ২৯টি করে আসন এসেছে। ওই সময়টায় মনে হচ্ছিল বিজেপি যে ২৯টি আসন পেয়ে সেটাই অনেক। কেননা ২০১৩ সালে তারা সেখানে একটি আসনও জয় করতে পারেনি।
অথচ মাত্র ঘণ্টা দুয়েকের ব্যবধানেই পাল্টে গেল পুরো ছবি। পতন হলো দীর্ঘ ২৫ বছরের মজবুত লাল দূর্গের। নির্বাচন হওয়া ৫৯ টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে মোট ৩৯ টি আসন। সেখানে সিপিএম পেয়েছে ২০ টি।
কংগ্রেস ত্রিপুরায় একটি আসনও পায়নি এবার। ২০১৩ সালের নির্বাচনে অবশ্য দলটি ১০ টি আসন পেয়েছিল।
বিধানসভায় ত্রিপুরার মোট আসন ৬০টি। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে কোনো দলকে কমপক্ষে ৩১টি আসন জয় করতে হবে। উত্তরপূর্ব ভারতের নির্বাচন চলা বাকি দুই রাজ্য মেঘালয় আর নাগাল্যান্ডের আসনের হিসাবও একই রকম। তবে ভোটের সময় এক প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ত্রিপুরার চারিলামের ভোটগ্রহণ স্থগিত এবং আরেক প্রার্থী নিহতের ঘটনায় মেঘালয়ের উইলিয়ামনগর আসনের ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয়।
নাগাল্যান্ড
নাগাল্যান্ডে বিজেপি ও এর আঞ্চলিক সহযোগী দল এনডিপিপি ৩১ আসন পেয়ে ক্ষমতাসীন এনপিএফ’কে পেছনে ফেলেছে। বিজেপি-এনডিপিপি জোটের বিপরীতে নাগাল্যান্ড মুখ্যমন্ত্রী টিআর জেলিয়াং-এর এনপিএফ পেয়েছে ২৬ টি আসন। কংগ্রেস এখানেও এবার কোনো আসন পায়নি।
২০১৩ সালে বিজেপি-এনডিপিপি জোট নাগাল্যান্ডে পেয়েছিল মাত্র ১ টি আসন। সেখানে এনপিএফ ৩৮ টি আসন পেয়ে সরকার গঠন করেছিল। আর কংগ্রেস আসন পেয়েছিল ৮ টি।
মেঘালয়
ত্রিপুরা ও নাগাল্যান্ডে আসন না পেলেও মেঘালয়ে ২৮ আসন পেয়ে অন্যদের থেকে এগিয়ে আছে কংগ্রেস। সেখানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এনপিপি পেয়েছে ১৩ টি এবং বিজেপি পেয়েছে ৮ টি আসন। অন্যান্য ছোট ছোট দল ও সতন্ত্র প্রার্থীরা মোট ১০ টি আসন জিতেছে।
কংগ্রেস ৩১ টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সরকার গঠন করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে এই ১০ টি আসন নিজ পক্ষে নেয়াটা অনেক বেশি জরুরি হয়ে পড়বে দলটির জন্য।
অন্যদিকে আশঙ্কা রয়েছে, আলাদাভাবে নির্বাচন করা করা বিজেপি এবং সমমনা এনপিপি ও ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি (ইউডিপি) ফলাফল ঘোষণা শেষে যে কোনো সময় জোট ঘোষণা করে ফেলতে পারে। সেক্ষেত্রে সরকার ঝুলে যেতে পারে।
এই আশঙ্কা থেকেই কংগ্রেসের কয়েকজন শীর্ষ নেতা দিল্লি থেকে বিমানযোগে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে এসে ছোট ছোট দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন।