মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ দাবি করেছেন, রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তকে ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে জাকির নায়েককে প্রত্যর্পণের কোনো কথাই তোলেননি ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
তবে ভারতের বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জাকির নায়েক প্রসঙ্গ উঠেছিল। সেখানে মোদি বলেছিলেন, জাকির নায়েকের বিষয়ে তার সরকারের উচ্চা পদস্থ কর্মকর্তারা মালয়েশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
তবে এই দাবির বিপরীত কথা বলেছেন মাহাথির মোহাম্মদ। তার দাবি মোদি একবারও জাকির নায়েক প্রসঙ্গে কথা বলেনি।
জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিয়ে স্পর্শকাতর মন্তব্য করার পর গত মাসে জাকির নায়েকের প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মালয়েশিয়ায়। দেশটি দাবি করে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
জাকির নায়েক বলেছিলেন, ‘ভারতের মুসলমানদের তুলনায় মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী হিন্দুরা ‘শতভাগ বেশি অধিকার’ ভোগ করেন। এছাড়াও, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার মুসলিম দেশটিতে চীনারা অতিথির মর্যাদা পান।’
যদিও এই বক্তব্য দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ক্ষমা চান তিনি।
২০১৬ সালের নভেম্বরে ভারতের কাউন্টার টেররিজম এজেন্সি ধর্মকে পুঁজি করে ঘৃণা ছড়ানো এবং অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনে। এরপর ২০১৭ সালে জাকির নায়েক ভারত থেকে পালিয়ে কয়েকটি দেশঘুরে মালয়েশিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নেন।
মুম্বাইয়ের মুসলমান অধ্যুষিত এলাকা ডংগ্রিতে ১৯৬৫ সালে এক ডাক্তার পরিবারে জাকির নায়েকের জন্ম । তার পিতা ছিলেন চিকিৎসক, তার বড়ভাইও চিকিৎসক।
সেন্ট মেরিস হাইস্কুলে লেখাপড়া শেষ করে তিনি মুম্বাইয়ের টোপিওয়ালা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়েন।
১৯৯১ সালে ডাক্তারি ছেড়ে দিয়ে ডংগ্রিতেই তিনি গড়ে তোলেন ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা।
২০১০ সালে ‘অগ্রহণযোগ্য ব্যবহার’ এবং বিতর্কিত বক্তব্য প্রদানের জন্য ব্রিটিশ সরকার তার বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
তবে তিনি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন ২০১৬ সালে ঢাকার হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর।
ওই সময় বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দাবি করে, হামলাকারীদের একজন জাকির নায়েকের বক্তব্য শুনে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। এরপরই বাংলাদেশে তার ‘পিস টিভি’র সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়।