ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের জঙ্গলে একা থাকা সেই বৃদ্ধা শতবর্ষী বৃদ্ধা মা সমলা অন্ধকার ঘর থেকে এখন হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাাকির হোসেনের নির্দেশে সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহফুজ ইবনে আইয়ুব তার দায়িত্ব নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন বলে জানা যায়। এছাড়া চিকিৎসার পাশাপাশি শতবর্ষী এই মায়ের বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে।
সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহফুজ ইবনে আইয়ুব চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘বৃদ্ধা মাকে হাসপাতালে ভর্তি করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী, পোশাক এবং ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। নিয়মিত খোঁজ খবরও রাখা হচ্ছে তার।’
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ‘সমলার শারীরিক অবস্থা এখন আগের থেকে এখন অনেকটা ভালোর দিকে। যাবতীয় চেকআপ করে তাকে সুস্থ্য করে তোলার প্রক্রিয়া চলছে।’
হাসপাতালে থেকে তার ছোট মেয়ে হালিমা খাতুন দেখাশোনা করছেন।
অপরদিকে এই বৃদ্ধার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ জুয়েল আরেং এম.পি। তিনিও নিয়মিত তার খোঁজ খবর নিচ্ছেন বলে জানা যায়।
গত ১০ বছর যাবৎ শতবর্ষী বৃদ্ধা মা সমলাকে অনাদরে অবহেলায় জঙ্গলে একটি নির্জন অন্ধকার কুঁড়েঘরে ফেলে রেখেছিলো মেয়েরা। যেখানে খেয়ে না খেয়ে সাপ-শেয়ালের সঙ্গে মানবেতর জীবন-যাপন করছিলেন তিনি । রোগে-শোকে মৃত্যুপথযাত্রী এই মায়ের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের।
চ্যানেল আই অনলাইনের পক্ষ থেকে শনিবার বিষয়টি জানিয়ে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সেই মায়ের খোঁজ-খবর নিয়ে তার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি পর্যবেক্ষক দল সেখানে গিয়ে যাবতীয় খোঁজ-খবর নিয়ে সমলাকে হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে তাকে হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এছাড়া এই বৃদ্ধা মায়ের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের লোকজনও সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্যে এগিয়ে আসে। তারা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছেন এই মায়ের।
পিতা-মাতা বৃদ্ধ বয়সে যাতে সন্তানদের অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার না হন সেজন্য পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন রয়েছে দেশে, যা ২০১৩ সালে পাস হয়। ওই আইনে সন্তানদের বিভিন্ন দায়িত্ব দেয়ার পাশাপাশি অপরাধ, দন্ড ও বিচারব্যবস্থার বিষয়েও বিধান রয়েছে।