আগে যে এলাকায় হাঁটতে হলে শত বার ধাক্কা খেতো হতো ফুটপাতে রাখা বিভিন্ন সামগ্রী আর হকারদের সাথে। বিশাল আকৃতির ডালায় জুতা-স্যান্ডেল, জামা-কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসতেন তারা। কেনাকাটা করতে আসা মানুষ ছাড়া সেখানটায় ভিড় ঠেলে হাঁটার সাহস করতেন না কেউ। সেই ফুটপাতই এখন দখলমুক্ত।
বলতে গেলে, যেখান দিয়ে হাঁটার কথা চিন্তাও করা যেত না, সেখানে চাইলে এখন দৌড়ানো যায়! চার দিন আগের উচ্ছেদ অভিযানে বদলে গেছে গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকার চিত্র এখন এমনই।
শনিবার সরেজমিনে দেখা গেলো, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের সামনের ফুটপাথ ১৬ ফিট চওড়া। দেখলে মনে হবে, আকম্মিক মাটি ভেদ করে বেরিয়েছে আস্ত এক সড়ক! দীর্ঘসময় ফুটপাত এমনভাবে দখল করে রাখা হয়েছিল, যে উচ্ছেদের পর এখন নিজের চোখকেও বিশ্বাস করা যায় না।
অনেক হকার তাদের পণ্য রাখার ডালা সরিয়ে রেখেছেন মার্কেটের ভেতর। মানবিক কারণেই কারও কারও জিনিসপত্র রাখতে রাজী হয়েছেন মার্কেটের দোকারিরা। তবে তারাও চান এখান থেকে হকার চিরতরে উচ্ছেদ হোক।
একজন দোকানি নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘হকার গিজগিজ করায় মার্কেটের ভেতরে মানুষ ঢুকতে চায় না। আমরা অনেক টাকা ভাড়া দিয়ে দোকান করি। হকারমুক্ত হলে আমাদের ব্যবসা ভালো হবে এবং শৃঙ্খলা ফিরবে সড়ক ও ফুটপাতে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফুটপাত ও সড়কে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ অভিযান ব্যাপক আকারে হয়েছিল ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। টানা তিন দিন উচ্ছেদ অভিযানের ফলে গুলিস্তান, পল্টন, বায়তুল মোকাররম ও মতিঝিল এলাকার চিত্র পাল্টে যায় ঠিক এখনকার মতোই। তবে খুব বেশিদিন ফুটপাত ব্যবহার করতে পারেননি সাধারণ পথচারীরা। দখল হয়ে যায় কয়েকদিন যেতে না যেতেই।
২০১৫ সালে গুলিস্তান এলাকার ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের ঘোষণা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। মেয়রের সেই ‘ক্লিন গুলিস্তান’ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা দৃশ্যমান হলো আরও একবার। যার সুফল পাওয়া যাচ্ছে সড়কেও।
এরই মধ্যে ভ্যানে করে হকারদের বেচা-বিক্রি বন্ধ হওয়ায় জনসমাগমও কমে গেছে। ভিক্ষুকদের আনাগোনাও চোখে পড়ছে না খুব একটা। যানজটের মাত্রাও চলে এসেছে সহনীয় পর্যায়ে।
আবু নকিব নামের একজন পথচারী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘ফুটপাত এখন যে অবস্থায় আছে, আমাদের চাওয়া সেই অবস্থায় থাকুক। আমরা সন্তুষ্ট। তবে এজন্য নজরদারিও বাড়াতে হবে কর্তৃপক্ষের। তবেই এর সুফল পাবে নগরবাসী।