সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের বড় ভূমিকা থাকার বিষয়টি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন সবচেয়ে বেশি নিশ্চিত বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা।
যুবরাজ ‘উন্মাদ’ বলেও প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন তারা।
মঙ্গলবার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র সঙ্গে রুদ্ধদ্বার শুনানির পর মোহাম্মদ জড়িত থাকার ব্যাপারে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।
শুনানি শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিনেটর লিন্ডসি গ্রাহাম বলেন, তিনি যথেষ্ট নিশ্চিত যে যুবরাজ মোহাম্মদ খাশোগি হত্যাকাণ্ডে জড়িত। সাউথ ক্যারোলাইনার এই রিপাবলিকান যুবরাজকে ‘ধ্বংসাত্মক’ এবং ‘উন্মাদ’ বলেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন।
গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় প্রথমে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করলেও নানা ধরনের বিভ্রান্তি ও পরস্পর বিরোধী দাবি করার পরে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে সৌদি আরব সরকার।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত দেশটির সরকার ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেও বারবারই হত্যাকাণ্ডে যুবরাজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে এসেছে।
মঙ্গলবার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সঙ্গে শুনানিতে সিআইএ প্রধান জিনা হ্যাসপেল বলেন, যুবরাজ মোহাম্মদের নির্দেশেই হত্যা করা হয় সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে। এ বিষয়ে সিআইএ’র তদন্তে পাওয়া তথ্য এবং তুরস্কের কাছে থাকা হত্যাকাণ্ডের সময়কার অডিও রেকর্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।
শুনানিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততায় সৌদি যুবরাজকেই অভিযুক্ত করেন তিনি।
আলোচনার পর সিনেটরদের কেউই কথা এড়ানোর বা সংক্ষেপে বলার চেষ্টা করেননি। সবার বক্তব্যই ছিল স্পষ্ট।
কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর বব কোর্কার বলেন, যুবরাজ সালমানের নজরদারিতেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল। ‘যদি যুবরাজকে সালমানকে বিচারের মুখোমুখি করা হয় তবে ৩০ মিনিটের মধ্যে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হবেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান,’ বলেন তিনি।
গ্রাহাম বলেন, খাশোগি হত্যায় যুবরাজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি এখন আর অনুমানের বিষয় নয়, এটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
যুবরাজ মোহাম্মদ যতদিন ক্ষমতায় থাকছেন ততদিন ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্টতা বা সৌদি সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি – কোনোটিতেই সমর্থন দিতে পারবেন না বলেও জানান তিনি।
নিউজার্সির ডেমোক্র্যাট সিনেটর বব মেনেনদেজও গ্রাহামের বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা জানান। বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবশ্যই একটি স্পষ্ট ও স্ব্যর্থহীন বার্তা দিতে হবে যে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিশ্বের দরবারে গ্রহণযোগ্য না।
হত্যাকাণ্ড বিষয়ে মোহাম্মদ বিন সালমান ‘জড়িত থাকতে পারেন’ বলে গত মাসে প্রতিবেদন দিয়েছিল সিআইএ।