আবরারের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিসহ ১০ দফা দাবি সময়সীমার মধ্যে না মানা হলে বুয়েটের সব ধরণের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা আরও জানান আবরার হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বুয়েটের শিক্ষক এবং সাবেক শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কর্মসূচি করছেন। আগে ৮ দফা দাবি থাকলেও নতুন দুটি দাবি সংযোজন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এর আগে বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে মৌন মিছিল করছেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় তারা অ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য খন্দকার সালেকসুফী ছাত্র রাজনীতি বন্ধের বিষয়ে একমত জানান।
তিনি বলেন, যেসব দাবি শিক্ষার্থীরা করেছে এসব দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী অবগত আছেন। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানেন কিনা এ প্রশ্নের কোন সুনির্দিষ্ট কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
ক্যাম্পাসে আন্দোলনের পাশাপাশি সন্ধ্যায় আবরারের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করবেন শিক্ষার্থীরা। তারা এ হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশের শিক্ষার্থীদেরও কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।
এছাড়াও, শিক্ষার্থীরা আরও দাবি জানিয়েছেন, আবরার হত্যারকারীদের কোন জায়গা হবে না এ ক্যাম্পাসে এবং ভিসির আশ্বাসে তারা আস্থা রাখতে পারছেন না বলে দফায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ২ নম্বর দাবি ছিল ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। আগামী ১১ তারিখ বিকেল ৫ টার মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে যাদের শনাক্ত করা হয়েছে সে আসামিদের এবং হত্যাকারীদের ছাত্রত্ব আজীবন বাতিল করতে হবে। সেই দাবিতেই তারা তারা স্লোগান দিচ্ছেন।
গত রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, ওই রাতেই হলটির ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত সোমবার ১৯ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় তারা মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার আবরার হত্যায় বুয়েট ছাত্রলীগের ১০ নেতা-কর্মীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আবরার হত্যা কাণ্ডের পর সারা দেশে বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়।