ভাস্কর মৃণাল হক মনে করেন, আনিসুল হক একজনই; তার জায়গায় একজন নয়-আরও দশজন আসতে পারেন। কিন্তু তার বিকল্প হওয়া সম্ভব নয়।
শনিবার বনানী কবরস্থানে প্রয়াত ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হককে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান তিনি ।
মৃণাল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কাজ বঙ্গবন্ধু ছাড়া অন্য কাউকে দিয়ে হবে না, রবীন্দ্রনাথের কাজ রবীন্দ্রনাথ ছাড়া অন্য কাউকে দিয়ে হবে না; তেমনি পিকাসোর ছবি আঁকা আরেকজনকে দিয়ে হবে না। কাজেই একজন না আরও দশজন আসতে পারেন (আনিসুল হকের জায়গায়) কিন্তু আমরা এই জিনিসটা আর পাবো না।’
আনিসুল হকের মতো মেয়র আরেকজন পাওয়া যাবে কিনা যে সত্যিকার অর্থে ঢাকার উন্নয়ন করবেন সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে অনেক বিখ্যাত ভাস্কর্যের এ নির্মাতা বলেন, ‘অন্যরা শুধু বক্তৃতা দিতে জানে, কাজের বেলায় নেই। উনি কিন্তু কথা কম বলে কাজ করে গেছেন। গোপনে গোপনে রাস্তা-ঘাট অলি-গলি সবকিছু তিনি উন্নয়ন করে গেছেন। সুতরাং বিকল্প পাওয়া সম্ভব নয়।’
‘‘সবাই স্বপ্ন দেখে শুধু নিজেকে ভারি করার জন্য; কিন্তু সত্যিকার অর্থেই নাগরিকদের কল্যাণে কাজ করে গেছেন’’ বলেন এ ভাস্কর।
আর্মি স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অসংখ্য মানুষ অংশগ্রহণে শেষ জানাযা শেষে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে আনিসুল হকের মরদেহ বনানী কবরস্থানে নিয়ে আসা হয়। এসময় রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জনতার ঢল সামলাতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
তাকে বহন করা গাড়ি কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার পরিবার ও নিকটাত্মীয় ছাড়া আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
তাকে কবরে রাখার পর কবরস্থানের গেট খুলে দেওয়া হলে সর্বস্তরের জনতার ঢল নামে তার কবরে মাটি দিতে এবং দোয়ায় অংশ নিতে।
এর আগে দুপুর ২:৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের বনানীর বাস ভবনে যান। প্রধানমন্ত্রী সেখানে গেলে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
প্রধানমন্ত্রী মরহুম মেয়রের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আনিসুল হকের স্ত্রী, পুত্র, কন্যারসহ মরহুমের পরিবারের সদস্যরা এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। এরপর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একান্তে বসে কথা বলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ঢকি উত্তর সিটির মেয়র।
পরের দিন শুক্রবার বাদ জুমা আনিসুল হকের প্রথম জানাজা লন্ডনের রিজেন্ট পার্ক সেন্ট্রাল মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার দুপুর ১টার বাংলাদেশ বিমান এয়ালায়েন্সের একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ ঢাকা আনা হয়।