পুরান ঢাকার চকবাজারে আগুনে পুড়ে প্রাণ গেছে ৭০ জনের বেশি মানুষের। আহত প্রায় শতাধিক। যারা বেঁচে আছেন, মৃত্যুর যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এসব অগ্নিদগ্ধ মানুষদের দেখতে আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে যান চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী।
স্ব-চক্ষে এসব অগ্নিদগ্ধ মানুষ দেখে বাপ্পী ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন বলে জানান এই নায়ক। বাপ্পী বলেন, ‘হাসপাতালে মানুষগুলোকে দেখতে না গেলে বুঝতাম না, তারা কত কষ্টে আছেন। স্বজনদের আহাজারিতে পুরো হাসপাতাল এলাকা ভারী। হাসপাতাল জুড়ে মানুষ পোড়া গন্ধ। কেবিনে কেবিনে মানুষদের আর্তনাদ। এমন অবস্থা আমি চোখের সামনে কখনো দেখিনি।’
তিনি বলেন, যখন কেবিন ঘুরে দেখছিলাম একজন আগুনে পোড়া মানুষ আমাকে দেখে ডেকে উঠলো। বলল, আমাকে সে চেনে। আমার সিনেমা দেখেছে। এ কথা শোনার পর আমি ঠিক থাকতে পারিনি। তার সঙ্গে অনেকক্ষণ আলাপ করেছি। এরপর সেখান থেকে যখন মর্গে যাই, সেখানে আরো ভয়াবহ অবস্থা। নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে সেখানে জড়ো হয়ে আছেন শত শত মানুষ। কেউ কেউ বলছে, মানুষ পুড়লে ছোট হয়ে যায়। উচ্চতায় অনেকের সঙ্গে মিলছে না। অনেকেই প্রিয়জনের লাশ এতে করে মেলাতে পারছে না। এ বিষয়টি খুব নাড়া দিয়েছে আমাকে। পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া লাশগুলো তারা চিনবেন কী করে?’
নায়ক বাপ্পী বলেন, ‘লাশ দেখে অসহায় মানুষগুলো কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ারও কেউ নেই। আমি হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন সাধ্যমত চেষ্টা করছেন তারা। মৃত্যু আমাদের জীবনে অবধারিত। কিন্তু সে মুত্যু কেন আগুনে পুড়ে হবে? টিভিতে আগুনে ঘর পোড়ার দৃশ্য দেখে ঠিক থাকতে পারিনি। আমি আমার সাধ্যমত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবো। আমি চাই এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে।’
আবেগ প্রবণ হয়ে বাপ্পী বলেন, যে জীবন চলে গেছে তা আর ফিরে আসবে না। যে ক্ষতি হয়েছে সেটা পূরণ করা তো সম্ভব নয়। রাষ্ট্র তাদের জন্য যা করার করবে। পাশাপাশি আমাদেরও ব্যক্তিগত উদ্যোগে এগিয়ে আসা উচিত। আমরা যদি এগিয়ে আসি তাহলে তাদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পূরণ হবে। তবে আপাতত যারা আহত আছেন তাদের যথাযথ চিকিৎসার প্রয়োজন। আমি চাই এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে। সে লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যদি নেওয়া হয়, তাহলে এ জাতীয় বিপর্যয়ের আশংকা অবশ্যই হ্রাস পাবে।